পুরসভা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ময়নাগুড়ি

ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সেখানে বাজিও পুড়িয়েছিলেন৷ সেটা তা হলে করা হল কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক বছর আগে সররকারি ভাবে প্রস্তাব গিয়েছে৷ তারও এক বছর আগে হয়ে গিয়েছে আবির খেলা, বাজি পোড়ানো৷ আর তার কয়েক বছর আগে পুরসভা গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় মানদণ্ডও অতিক্রম করে গিয়েছে এলাকা৷ তারপরও তৈরি হয়নি পুরসভা৷ ফলে পাশের শহর ধূপগুড়ি যখন পুরভোট নিয়ে সরগরম, ঠিক তখন ময়নাগুড়ির মানুষের মনে আক্ষেপ৷ শহরের এক প্রবীণের কথা, ‘‘ধূপগুড়ি পুরভোট দিল। আমরা পঞ্চায়েত ভোটই দেব।’’

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের আগে ময়নাগুড়ি পুরসভা হতে পারবে না বলে মনে করেন প্রশাসনের কর্তারা বা শাসক দলের নেতারাও। ময়নাগুড়ির বিডিও শ্রেয়সী ঘোষ জানান, ব্লকের কোন কোন এলাকা নিয়ে পুরসভা গঠন সম্ভব তার ম্যাপ সহ প্রস্তাব এক বছরেরও বেশি আগে মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতরে পাঠানো হয়েছে৷ কিন্তু তারপর আর বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি৷ কোনও বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়নি৷ শ্রেয়সী বলেন, ‘‘তাই ময়নাগুড়ি কবে পুরসভা হবে জানি না৷’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মনোজ রায়ও বলেন, ‘‘ময়নাগুড়ি যে দ্রুত পুরসভা হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই কিন্তু সামনেই যেহেতু পঞ্চায়েত নির্বাচন, তাই তার আগে এলাকাকে পুরসভা করা হবে বলে মনে হয় না৷’’ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ময়নাগুড়ি পুরসভা হয়ে গিয়েছে ঘোষণা করে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাই তো এলাকায় আবির খেলেছিলেন৷ তারপরে

ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সেখানে বাজিও পুড়িয়েছিলেন৷ সেটা তা হলে করা হল কেন?

Advertisement

মনোজবাবুর দাবি, পুরসভা ঘোষণা হয়ে গিয়েছে বলে মোটেও সেটা করা হয়নি৷ তাঁর দাবি, ময়নাগুড়ি যে পুরসভা হবে, সেটা সেই সময় বিধানসভায় পাশ হয়েছিল৷ তাই কিছু মানুষ আবির খেলেছিলেন বা পটকা পুড়িয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভায় কিছু পাশ হওয়ার পর তার বাস্তবায়নে কিছু সময় লাগে৷’’

কোনও একটি এলাকাকে পুরসভা করতে হলে সেই এলাকার জনসংখ্যা ত্রিশ হাজারের উপরে হতে হবে। ওই এলাকায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে কম করে সাড়ে সাতশো মানুষের বসবাস হতে হবে৷ ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের অর্ধেকের বেশি জনকে অ-কৃষিজীবী হতে হবে। ময়নাগুড়ি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ঘোষাল বলেন, এই সব শর্ত ময়নাগুড়ি পূরণ করেছে৷ কিন্তু পুরসভা হয়নি৷

এলাকার বাসিন্দা চিকিৎসক নারায়ণচন্দ্র দাস, সুভাষনগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়ও বলেন, ‘‘কেন ময়নাগুড়িকে বঞ্চিত রাখা হবে?’’ প্রাক্তন ফুটবলার ঝুলন দে থেকে ব্যবসায়ী সমিতির সহ সম্পাদক স্বপন দত্তর বক্তব্য, অনেক আন্দোলন হয়েছে, সবাই আশ্বাসও দিয়েছেন, কিন্তু পুরসভা হল না।

জলপাইগুড়ির জেলাশসক রচনা ভকত বলেন, ‘‘আমার সময়ে এমন কোনও প্রস্তাব আমার কাছে আসেনি৷ তবে আগে যদি প্রস্তাব পাঠান হয়ে থাকে সেটা কী অবস্থায় রয়েছে অবশ্যই খতিয়ে দেখব৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন