রক্ষা: হাসপাতালে ভর্তি নবাব বাহাদুর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
কেউ পঞ্চাশ পয়সার কয়েন, কেউ বা আবার খেলার ছলে গিলে ফেলেছিল পাঁচ টাকার কয়েন। একই দিনে পৃথক এলাকার তিন শিশুর গলায় আটকে থাকা কয়েন অস্ত্রোপচার করে বের করলেন চিকিৎসকেরা। রবিবার রাতে সফল তিনটি অস্ত্রোপচারের ঘটনা ঘটেছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। চিকিৎসকদের তৎপরতায় শিশুরা রক্ষা পাওয়ায় খুশি পরিবারের লোকেরা।
ইংরেজবাজার শহরের ব্যারাক কলোনি এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিৎ সাহা তাঁর তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে বিছানায় খেলা করছিলেন। আচমকা ছোট্ট মেয়েটি বিছানায় থাকায় পাঁচ টাকার কয়েন গিয়ে ফেলে। শনিবার সন্ধেতেই মালদহের মোথাবাড়ি থানায় আরও এক শিশু খেলতে গিয়ে পাঁচ টাকার কয়েন গিলে নেয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুর নাম নবাব বাহাদুর। তার বাবা মিন্টু শেখ দিনমজুরি করেন। গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এদিনই রাতে দুই শিশুর অস্ত্রোপচার করেন হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ বিভাগের চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক পারভেজ খুরশেদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তারপরে শিশুদের খাদ্যনালীতে আটকে থাকা পাঁচ টাকার কয়েনগুলো বের করেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, খাদ্যনালীতে কয়েন আটকে থাকলে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হতে পারত। প্রাণহানির আশঙ্কাও ছিল বলে দাবি চিকিৎসকদের।
ঝাড়খণ্ড থেকে আরও এক শিশু ভর্তি হয় হাসপাতালে। তার গলায় আটকে গিয়েছে পঞ্চাশ পয়সার কয়েন। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই শিশুর নাম আঞ্জেলা খাতুন। সে-ও রেফার হয়ে আসে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এই শিশুটিরও গলা থেকে সফল ভাবে বের করা হয় পয়সাটি।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডেপুটি সুপার জ্যোতীষচন্দ্র দাস বলেন, “সফল ভাবে তিনটি শিশুর গলায় আটকে থাকা কয়েনগুলো বের করেছেন আমাদের চিকিৎসকেরা। একই দিনে তিনটি সাফল্য পেয়ে খুব ভাল লাগছে।” আরোষীর বাবা রঞ্জিতবাবু বলেন, “মোবাইল নিয়ে খেলতে খেলতে মেয়ে পয়সা গিলে নিয়েছিল। সরকারি হাসপাতালে এত সহজে গলা থেকে তা বের হবে, তা ভাবতে পারিনি। চিকিৎসকদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”