অসুস্থ ছেলের খোঁজে দেওয়ালে পোস্টার মায়ের

দু’সপ্তাহ আগের ঘটনা। ৩১ বছরের অসুস্থ ছেলে তজবুর রহমানকে ডাক্তার দেখাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে এসেছিলেন জাবেদা বিবি। কিন্তু হাসপাতালে ভিড়ের মধে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান তাঁর ছেলে। হাসপাতাল চত্বরে এবং ইংরেজবাজার শহরে এবং শেষে নিজেদের গ্রামেও খোঁজ করে সন্ধান মেলেনি সেই ছেলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৪
Share:

সন্ধানে: হাসপাতালে জাবেদা বিবি। নিজস্ব চিত্র

দু’সপ্তাহ আগের ঘটনা। ৩১ বছরের অসুস্থ ছেলে তজবুর রহমানকে ডাক্তার দেখাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে এসেছিলেন জাবেদা বিবি। কিন্তু হাসপাতালে ভিড়ের মধে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান তাঁর ছেলে। হাসপাতাল চত্বরে এবং ইংরেজবাজার শহরে এবং শেষে নিজেদের গ্রামেও খোঁজ করে সন্ধান মেলেনি সেই ছেলের। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেও পুলিশ সন্ধান দিতে পারেনি তার। ছেলের খোঁজে এখন পোস্টার সেঁটে চলেছেন জাবেদা। তাঁর আশা, পোস্টার দেখে যদি কেউ ছেলের সন্ধান দিতে পারেন।

Advertisement

জাবেদা বিবির বাড়ি পুরাতন মালদহ ব্লকের বরকল ইসলামপুর গ্রামে। তাঁর দাবি, তাঁর ছেলে পুরোপুরি সুস্থই ছিল। কয়েক বছর আগে ভিন রাজ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিল। কিন্তু প্রায় বছরখানেক আগে ছেলে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। তখন থেকেই ছেলে মানসিক ভাবে অসুস্থ। বাইরে গিয়ে চিকিত্সা করার সামর্থ নেই তাঁদের। তাই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে মানসিক রোগ বিভাগে চিকিত্সা চলছে ছেলের। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৬ তারিখ তিনি নিজেই ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। আউটডোর ভবনের তিনতলায় মানসিক বিভাগে লাইনে দাঁড়িয়ে ছেলেকে ডাক্তারও দেখান। এক্স-রের ঘরের সামনে দিয়ে বের হওয়ার সময় সেখানে প্রচণ্ড ভিড় ছিল।

জাবেদার দাবি, সেই ভিড়ের মধ্যে পড়ে ছেলে হারিয়ে যায়। ওইদিন তিনি হাসপাতাল চত্বর তো বটেই, এমনকী আশেপাশের এলাকা-সহ শহরের একাধিক এলাকায় ছেলের খোঁজ করেন। গ্রামে ফিরেও খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু হদিস পাননি। শেষে মালদহ থানায় গিয়ে নিখোঁজের ডায়েরি করেন। এরপর ১২ দিন কেটে গেলেও এখনও ছেলের হদিশ নেই। তাঁর অভিযোগ, ছেলেকে খোঁজার ব্যাপারে পুলিশের কোনও হেলদোলই নেই। থানায় গেলেই শুধু জানানো হচ্ছে পুলিশ চেষ্টা করছে। ছেলের খোঁজ পেতে তাই বাধ্য হয়েই তিনি নিজেই পোস্টার সাঁটছেন। যে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছেলে হারিয়েছে সেই হাসপাতালজুড়েও ছেলের ছবি সম্বলিত অসংখ্য পোস্টার সেঁটেছেন নিজেই। এ ছাড়া ইংরেজবাজার শহরের একাধিক এলাকা, রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড সর্বত্রই তিনি একাই পোস্টার সেঁটে চলেছেন।

Advertisement

জাবেদা বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করেছি। আমার এমন আর্থিক সামর্থ্য নেই যে বিজ্ঞাপন দেব। তাই সামান্য কিছু টাকা খরচ করে পোস্টার তৈরি করে তা এলাকায় এলাকায় সাঁটছি। যাতে ওই পোস্টারের মাধ্যমেই ছেলেকে ফিরে পেতে পারি। মালদহ থানার পুলিশ জানিয়েছে, তারা বসে নেই। ওই ছেলের ছবি বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে তাঁর খোঁজ চালানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন