দুই শহরে ডাক্তারদের দুই সাফল্য

অস্ত্রোপচারে বার হল হাড়

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:২২
Share:

রক্ষা পেল আব্দুল করিম। —নিজস্ব চিত্র

বিয়ের অনুষ্ঠানে খেতে গিয়ে শ্বাসনালীতে আটকে গিয়েছিল মাংসের হাড়। প্রায় দু’ইঞ্চি লম্বা এবং ধারালো ছিল হাড়টি। মালদহের পুকুরিয়ার এক কিশোরের শ্বাসনালীতে বিপজ্জনক ভাবে আটকে থাকা মাংসের হাড় অস্ত্রোপচারের করে বার করে দৃষ্টান্ত গড়লেন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।

Advertisement

চিকিৎসকদের তৎপরতায় রক্ষা পেয়ে যাওয়ায় খুশি পুকুরিয়ার বাসিন্দা আব্দুল করিম ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, “হাড়টি খুব ধারালো থাকায় শ্বাসনালী ফুটো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। এমনকী, হাড়টি বেশিক্ষণ গলায় আটকে থাকলে অঘটনও ঘটতে পারত। আমরা এন্ডোস্কোপিক সার্জারির মাধ্যমে গলায় আটকে থাকা সেই হাড় বার করেছি।” এখন ওই রোগীর অবস্থা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন তিনি।

পুকুরিয়া থানার কুমারগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিনগর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল করিম। গত, বৃহস্পতিবার রাতে কুমারগঞ্জে আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল আব্দুল। মাংস ভাত খাওয়া-দেওয়া চলছিল। সকলের সঙ্গে খেতে বসেছিল করিমও। আচমকা খেতে একটি মাংসের হাড় ভাতের সঙ্গে খেয়ে ফেলে সে। তার পরই শুরু হয়ে যায় বাড়িতে হইচই।

Advertisement

পরিবারের লোকেরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যান হাতিমারি গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে গ্রামীণ হাসপাতালে সেই পরিকাঠামো না থাকায় ওই চিকিৎসকেরা স্থানান্তরিত করে দেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। তার পরেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে গঠিত হয় চার সদস্যের মেডিক্যাল টিম। প্রথমে ছবি তুলা হয়। তার পরেই প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে অস্ত্রোপচার।

চিকিৎসকদের দাবি, গলায় ২৪ ঘণ্টা হাড়টি আটকে থাকলে শ্বাসকষ্ট থেকে প্রাণহানি ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আর ধারালো থাকায় শ্বাসনালী এবং খাদ্যনালীও ফুটো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। আব্দুল করিম জানায়, “হাড়টি আটকে যাওয়া মাত্র আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আর দম নিতে পারব না। চিকিৎসকদের জন্য কার্যত এ যাত্রায় রক্ষা পেলাম।” চিকিৎসক আব্দুর রশিদ বলেন, “ফোন কিংবা গল্প করতে করতে খাওয়া থেকে মানুষকে সচেতন হতে হবে।”

সম্প্রতি, কালিয়াচকেরই বাসিন্দা দুই শিশুর মধ্যে এক জনের গলায় লকেট এবং অন্য জনের গলায় কইমাছ আটকে গিয়েছিল। এ ছাড়া এক শিশুর গলায় আটকে থাকা কয়েন বের করার নজির রয়েছে মালদহে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসদের চেষ্টায় জটিল অস্ত্রোপচারে আমরা সাফল্য পাচ্ছি। রোগীদের সুচিকিৎসা পরিষেবা দিতে পেরে আমরা খুশি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন