ফাইল চিত্র
দিনকয়েক ধরেই টানাপড়েন চলছিল। মঙ্গলবার কালীঘাটে একুশে জুলাই য়ের মঞ্চ থেকে রাজবংশীদের নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে। তারা মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “রাজবংশী ভাইবোনেরা আমার শরীরের একটা অংশ, কামতাপুরি ভাইবোনেরা আমাদের শরীরের একটা অংশ।” লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই রাজ্যে রাজনৈতিক কার্যকলাপ শুরু হয়। কোচবিহার-সহ গোটা উত্তরবঙ্গে একের পর এক রাজবংশীদের নিয়ে প্রচারে নামে বিজেপি। এ দিন মমতা অভিযোগ করেন, বিজেপি সবার সঙ্গে সঙ্গে সবার বিরোধ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূলের পক্ষে এখন কেউ নেই। রাজবংশীদের উপরে অত্যাচার চলছে। এটা সবাই জানে। তাই তাঁর এ ধরনের বক্তব্যে কোনও লাভ হবে না।”
কয়েকদিন ধরেই একের পর এক ঘটনায় উত্তপ্ত উত্তরবঙ্গ। হেমতাবাদে বিধায়ক হত্যার অভিযোগ, স্বপ্না বর্মণের বাড়িতে বন দফতরের হানা, কোচবিহারে শিক্ষকের কাছে তোলাবাজির অভিযোগ এবং শেষে চোপড়ায় কিশোরী খুনের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় উত্তরবঙ্গ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজবংশীদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে। তাতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে বিজেপি। এটা নিয়ে তারা উত্তরবঙ্গ জুড়ে আন্দোলনও শুরু করেছে। তৃণমূলও অবশ্য চুপ করে বসে নেই। তারাও নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ তুলে ধরে বিজেপির অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে। তৃণমূল নেতা তথা রাজবংশী সম্প্রদায়ের বলে পরিচিত পার্থপ্রতিম রায় ফেসবুক লাইভ করে পাল্টা তোপ দাগেন। তিনি বলেন, “বিজেপিই রাজবংশীদের জন্য কিছু করেনি। ভোটের স্বার্থে এখন নানা কথা তুলে ধরছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে রাজবংশীদের জন্য একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়েছেন।“
উত্তরবঙ্গের একাধিক বিধানসভা এলাকায় রাজবংশীদের বাস। নির্বাচনী অঙ্কের হিসেব বলে, ওইসব এলাকায় যারা রাজবংশীদের কাছে টানতে পারবে, তারাই জয়ী হবে। আর এটা রাজ্যের শাসক ও বিরোধী ভাল করেই বোঝে। সেই জন্যেই রাজবংশী সম্প্রদায়ের ভোট টানার জন্য দুই দলই সদা তৎপর। আর সেই জন্যেই এ দিন রাজবংশী সম্প্রদায়কে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মমতা।