তরাই-ডুয়ার্সের সব বন্ধ চা বাগান দ্রুত খোলানোর জন্য জেলা প্রশাসনকে ফের আলোচনা শুরুর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড় সফর সেরে কলকাতায় ফেরার আগে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সুকনা বনবাংলোয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বন্ধ বাগান খোলা নিয়ে আলোচনা সারেন। সেখানেই তিনি ওই নির্দেশ নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
ওই কাজে সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালনের জন্য আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সৌরভবাবু বলেন, ‘‘চা বাগান খুলতে কোনও রকম দেরি মুখ্যমন্ত্রী বরদাস্ত করবেন না বলে জানিয়েছেন। আজ থেকেই আলোচনা শুরু করে দেওয়া হয়েছে।’’ ডুয়ার্স-তরাই-পাহাড়ে বর্তমানে বন্ধ বাগানের সংখ্যা ১২টি। রুগণ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৩০টি। সৌরভবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, কোন বাগানে কী জটিলতা ও বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক কি তা জেনে সেই মতো পদক্ষেপ করা না হলে বন্ধ বাগান খোলা সম্ভব নয়। সেই মতো বুধবার থেকেই জলপাইগুড়ির জেলাশাসক-সহ অন্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সৌরভবাবু।
বন্ধ বাগান নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার কয়েকটি বন্ধ চা বাগান পরিদর্শন করেন। সে সময়ে বন্ধ চা বাগান নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নানা মন্তব্যের সমালোচনা করা হয় রাজ্যের তরফে। গত বছর কয়েকটি বন্ধ চা বাগান চা পর্ষদ অধিগ্রহণ করে। তা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রীরা সরব হন। রাজ্যের সমালোচনার জবাবে কেন্দ্রের তরফে বারবার দাবি করা হয়, বন্ধ বাগান খোলার দায়িত্ব রাজ্যেরই। এক প্রশাসনিক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলে দেন কিছু শোনার নেই দ্রুত বন্ধ বাগান খুলতে হবে।’’ ইতিমধ্যে বেশ কিছু বন্ধ এবং পরিতক্ত্য চা বাগানের লিজও বাতিল করেছে রাজ্য সরকার।
বন্ধ ও ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলির শ্রমিকদের সহযোগিতার জন্য রাজ্য সরকার প্রায় একশো কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এ বার দ্রুত বন্ধ বাগান খুলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে বার্তা দিতে চান বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। আগামী ২৭ জানুয়ারি তরাইয়ের বন্ধ ত্রিহানা চা বাগান খুলতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক রয়েছে শিলিগুড়িতে।