বিয়েতে মানা, স্ত্রীকে মারধর

তবে শেষ পর্যন্ত হাসু তালাক দেননি। মিনাবিবিকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন। সে সময় দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর এক ছেলে আফেল শেখও মিনাবিবিকে মারধর করে। আচমকা হাসু মিনাবিবির নাকে হাঁসুয়ার উল্টো দিক দিয়ে কোপ দেয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে মাত্র পাঁচ মাস। আবার বিয়ে করেছেন মালদহের সুলতানগঞ্জের হাসু শেখ। ষাটোর্ধ্ব হাসুর প্রথম স্ত্রী মিনাবিবি তার প্রতিবাদ করেন। হাসু তখন তাঁকে প্রথমে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। তারপরে মিনাদেবীকে মারধর করেন।

Advertisement

অভিযোগ, হাসু স্ত্রীর নাকে হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করে। মিনাবিবি ভর্তি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সুলতানগঞ্জের বাসিন্দা হাসু শেখ ও মিনাবিবির তিন সন্তান। দুই মেয়ে ও এক ছেলে। আরও পাঁচ সন্তান মারা গিয়েছে। মিনাবিবির পরে মঙ্গলীবিবি নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন হাসু। সেই দ্বিতীয় পক্ষের পাঁচ ছেলে, এক মেয়ে। একই বাড়িতেই তাঁরা থাকেন। পাঁচ মাস আগে মঙ্গলীবিবি মারা যান। মিনাবিবি জানান, কয়েকদিন আগে গ্রামবাসী মারফত জানতে পারেন, তাঁর স্বামী আরও এক মহিলাকে বিয়ে করেছে। সেই মহিলার এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ে করে তাঁকে কলেজ পাড়ায় এক বাড়িতে রেখেছেন হাসু। মিনা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে তিনি স্বামীর কাছে তৃতীয় বিয়ে করার প্রতিবাদ করেন। সেই সঙ্গে তাঁর নিজের বিবাহযোগ্যা এক কন্যার বিয়ে কী ভাবে হবে সেই প্রশ্নও তোলেন।

অভিযোগ, সে সময় হাসু তাঁকে তাৎক্ষণিক তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাৎক্ষণিক তালাক যে সুপ্রিম কোর্ট নিষিদ্ধ করে দিয়েছে, তা হাসুর জানা ছিল না। তবে কেউ কেউ দাবি করেছেন, হাসু সুপ্রিম কোর্টের রায় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বলেই তিন তালাক দেননি।

Advertisement

তবে শেষ পর্যন্ত হাসু তালাক দেননি। মিনাবিবিকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন। সে সময় দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর এক ছেলে আফেল শেখও মিনাবিবিকে মারধর করে। আচমকা হাসু মিনাবিবির নাকে হাঁসুয়ার উল্টো দিক দিয়ে কোপ দেয় বলেও অভিযোগ।

মিনাবিবিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সিলামপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মিনা বিবি কালিয়াচক থানায় স্বামী ও সৎ ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন। ঘটনার পর বাড়ি ছাড়া দুই অভিযুক্তই।

পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় মারধরের একটি অভিযোগ হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

মিনাবিবির সঙ্গে থাকা এলাকার কয়েকজন মহিলা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের ভয়েই শেষপর্যন্ত তালাক থেকে পিছিয়েছেন হাসু। তাই ভয়ে তালাক না দিয়ে স্ত্রীকে মারধর করেছে। গ্রামের আর এক অংশের বাসিন্দাদের অবশ্য বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দিয়েছে, সে সম্বন্ধে হাসুর কোনও ধারণাই নেই, প্রথম পক্ষের স্ত্রী তৃতীয় বিয়ের প্রতিবাদ করেছে এবং সে স্ত্রীকে পিটিয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন