সাহায্যপ্রার্থী: রফিকুল মিয়াঁর পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটার কার্ড আছে। রেশন কার্ড আছে। আছে আধার কার্ডও। তবে জমির কাগজ এখনও মেলেনি। নয়ডায় বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত কোচবিহারের সাবেক ছিটমহল পোয়াতুরকুঠির বাসিন্দা রফিকুল মিয়াঁর জামিনের শর্তে সেই জমির কাগজই প্রয়োজন হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁর পরিবারের বাসিন্দারা।
বুধবার রফিকুলের মা রহিমা বিবি ও ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রবিউল কোচবিহার জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে সেই অসুবিধের কথা জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। রহিমা বিবি বলেন, “জমি তো আমাদের আছে। সরকার এখনও নামজারি করেননি। তাহলে জমির কাগজ আমরা কোথায় পাব। সেক্ষেত্রে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।” রবিউলের কথায়, “আমাদের জন্যেই বাবা ভিন্ রাজ্যে গিয়ে কাজ করেন। সরকার বাবাকে ফিরিয়ে আনুক।” কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষের সঙ্গে এ দিন দেখা করেন পোয়াতুরকুঠির বাসিন্দারা। তিনি বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দিন কয়েক আগেই নয়ডায় থাকা কোচবিহারের বাসিন্দাদের বাংলাদেশি সন্দেহে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে তোলা হয়। সেখানে শর্তসাপেক্ষ জামিন মঞ্জুর করে বিচারক। রফিকুলের আত্মীয়রা জানান, জামিনদার হিসেবে তিনজন ভারতীয় বাসিন্দাকে চাওয়া হয়েছে যাদের স্থাবর সম্পত্তি সহ জমি রয়েছে। সেই কাগজপত্র আদালতে জমা দিতে হবে। রফিকুলের আত্মীয় ও পরিচিতরা সকলেই সাবেক ছিটমহলের। এখন পর্য়ন্ত সাবেক ছিটমহলের কোনও জমি নামজারি করা হয়নি। পোয়াতুর কুঠির বাসিন্দারা বলেন, “এই ক্ষেত্রে রফিকুলের বিষয়টি অন্য ভাবে ভাবা উচিত।” দিনহাটার বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ বলেন, “দ্রুত জমির কাজ দেওয়ার ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি। প্রশাসনের সঙ্গেও কথা হয়েছে। কিন্তু জামিনের ব্যাপারে আশেপাশের কারো জমির কাগজ দিয়ে সহায়তা করতে হবে। সে ব্যাপারে পাশে থাকব।”
বর্তমানে বিজেপির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত একসময় ছিটমহল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনিও এদিন ওই বাসিন্দাদের সঙ্গে জেলাশাসকের দফতরে যান। তিনি জানান, বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিল রঞ্জন দেকেও লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনিও ওই ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের আশ্বাস দিয়েছেন। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “বিজেপি সরকার এই ঘটনার জন্য দায়ী। তাঁদের নেতারা এখানে ভোটের রাজনীতি করছেন। সঠিক কাজ করতে হলে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। আর তিনজন জামিনদার জোগাড় করে রফিকুলের পাশে দাঁড়ান।