ভর দুপুরে মারপিট, কাঁচির কোপ

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে নুরুলের মাথায় ৮টি সেলাই পড়েছে। তবে নুরুল এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেও পাল্টা আক্রমণের অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্ত যুবক মহম্মদ নইম। চোট লেগেছে নইমেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৩০
Share:

আহত: হাসপাতালে নুরুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র

কাঁচি নিয়ে মারপিট করছেন কিছু লোক। মঙ্গলবার ভর দুপুরে আদালতের উল্টোদিকে এই দৃশ্য দেখে থমকে যায় ভিড়। শেষমেশ আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে এসে মারপিট থামাতে চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে আসে পুলিশও। এ দিনের মারপিটের জেরে আহত হয়েছেন নুরুল ইসলাম এবং মহম্মদ নইম নামে দুই ব্যক্তি।

Advertisement

মাথায় সেলাই নিয়ে নুরুল শিলিগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে নুরুলের মাথায় ৮টি সেলাই পড়েছে। তবে নুরুল এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেও পাল্টা আক্রমণের অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্ত যুবক মহম্মদ নইম। চোট লেগেছে নইমেরও। তাঁকে অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতে থানায় দুই তরফেই অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারপরে দু’টি মামলা রুজু করে নইম এবং নুরুলের ছোটছেলে শাহনাওয়াজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সূত্রের খবর, নুরুল ও নইমের মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত এ বছর পুজোর আগে। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রানাবস্তির ক্ষুদিরামপল্লিতে নিয়মিতভাবে মদ ও গাঁজার আড্ডা বসানোর অভিযোগ রয়েছে কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। সেসময় তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে এলাকার এক মহিলাকে মারধরের অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। মহিলার পক্ষ নেওয়ায় নুরুল এবং তাঁর পরিবারের উপর এলাকার কিছু যুবক চড়াও হয়ে তাঁর ঘর ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে তখনকার মতো পরিস্থিতি সামাল দেয়। নইম ও আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল নুরুল।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ি আদালতের ঠিক উল্টোদিকে একটি জেরক্সের দোকান থেকে নইমের ছবির প্রিন্টআউট বের করছিলেন নুরুল। ঘটনাচক্রে সেই সময় সেখানে হাজির হয়েছিলেন নইম। কেন তাঁর ছবির প্রিন্টআউট বের করা হচ্ছে তা নিয়ে নুরুলের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। পাশের দোকান থেকে একটি কাগজকাটা কাঁচি নিয়ে দু’জনের মধ্যে মারপিট শুরু হয়। পরে দু’পক্ষের আরও লোকজন এসে হাজির হয়। নইমের পিঠেও কাঁচির চোট রয়েছে বলে দাবি তাঁর পরিবারের। তবে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুপুরের পরে নইম এবং নুরুলের ছোট ছেলে শাহনাওয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।

নুরুল বলেন, ‘‘এই ছেলেগুলো এলাকায় প্রচুর সমস্যা করছে। আমি এর আগে এদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। তা তোলার জন্যই এ দিন নইম ও আসিফ নামে দু’জন কাঁচি দিয়ে মারধর করে আমাকে। এর পিছনে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর নিখিল সাহানির মদত রয়েছে।’’ যদিও নইমের পাল্টা দাবি, তাঁকেই আগে কাঁচি দিয়ে আক্রমণ করা হয়। নিখিল সাহানির দাবি, ‘‘এলাকায় যার তার বিরুদ্ধে মামলা করে দেয় নুরুল। কয়েকটি বাচ্চা ছেলের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে। আর অভিযোগ করলেই পুলিশ মামলা করছে। বিষয়টি নিয়ে আমি মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে কথা বলব।’’ বাগরাকোট এলাকায় বারবার দুষ্কৃতী তান্ডবে বিরক্ত এলাকার ব্যবসায়ীরা। অবিলম্বে পুলিশকে অসামাজিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন