গাড়ি, চালকের উপরে নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন

শিলিগুড়ি শহরে ছাত্র ছাত্রীদের আনা নেওয়া করা কয়েকশো পুলকারের উপর আদৌও কোনও নজরদারি রয়েছে কি না তা নিয়ে ধন্ধে অভিভাবকরা। কারণ পড়ুয়াদের আনা-নেওয়ার জন্য শহরে কত পুলকার রয়েছে, তার সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই পরিবহণ দফতরের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৪৬
Share:

আতঙ্কের ছাপ পুলকারে থাকা খুদেদের চোখেমুখে। — নিজস্ব চিত্র

শিলিগুড়ি শহরে ছাত্র ছাত্রীদের আনা নেওয়া করা কয়েকশো পুলকারের উপর আদৌও কোনও নজরদারি রয়েছে কি না তা নিয়ে ধন্ধে অভিভাবকরা। কারণ পড়ুয়াদের আনা-নেওয়ার জন্য শহরে কত পুলকার রয়েছে, তার সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই পরিবহণ দফতরের কাছে। তথ্য নেই পুলকার যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদের সম্পর্কেও। বিধি মেনে গাড়িগুলির কারিগরি পরীক্ষা হয় না বলেও অভিযোগ।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির ডাবগ্রামে গাড়ি চালানোর সময়েই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক পুলকার চালকের। সে সময়ে গাড়িতে ছিল পড়ুয়ারাও। বেশ কিছুদিন যাবৎ ওই চালক অসুস্থ ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। তা সত্ত্বেও এতগুলি শিশুর ভার ছিল তাঁর উপর। তাই পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ।

যে কোনও গাড়ির পারমিট অথবা বিধি মেনে চলাচলে নজরদারির দায়িত্ব পরিবহণ দফতরের। নিয়ম অনুযায়ী বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রী পরিবহণ করা গাড়ির বাধ্যতামূলক ভাবে ‘পারমিট’ অর্থাৎ কোন রাস্তায় চলাচল করবে তার অনুমতি নিতে হয়।

Advertisement

জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, এখনও শিলিগুড়িতে পুলকারে পারমিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তার ফলে কত পুলকার শহরে চলাচল করে তার কোনও হিসেব দফতরের কাছে নেই। পরিবহণ আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী স্কুলবাস এবং পুলকার চলাচলে একাধিক বিধি নিষেধ রয়েছে। গাড়ির বয়স থেকে চালকের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা, শারীরিক সক্ষমতা সব বিষয়েই নির্দিষ্ট মাপকাঠি রয়েছে। দার্জিলিং জেলা পরিবহণ দফতরের এআরটিও নবীন অধিকারি বলেন, ‘‘পুলকারের পারমিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব মাপকাঠি পালন করা হবে।’’

সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় অন্তত সাড়ে চারশো পুলকার চলাচল করে। কিছু পুলকার স্কুলের নিজস্ব। কিছু ক্ষেত্রে আবার একই স্কুল অথবা বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের আনা নেওয়ার জন্য বিশেষ পুলকার রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পুলকার চালকদের যাবতীয় তথ্য পরিবহণ দফতরকে জানাতে হয়, ১২ বছরের পুরনো কোনও গাড়ি পড়ুয়াদের আনা নেওয়া করতে পারবে না বলেও নিয়ম রয়েছে। প্রতিটি গাড়ি বছরে একবার কারিগরি পরীক্ষা করাতে হয়, চালকদের মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানোর কথা। পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সব মাপকাঠি তৈরি হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে। নির্দেশিকা থাকলেও শিলিগুড়িতে তার কোনটাই মানা হয়নি বলে অভিযোগ।

শিলিগুড়ি পুরসভার স্কুল বিষয়ক মেয়র পরিষদ সদস্য শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাজ্য এবং দেশে বেশ কিছু পুলকার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতদিনে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ করা উচিত ছিল। পুরসভার তরফেও প্রশাসনকে চাপ দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন