Anit Thapa

জনসংযোগ শুরু অনীতের

একদা পুরনো সঙ্গী, বর্তমানে আবার বিমল গুরুং শিবিরের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র তথা নারী মোর্চা নেত্রী বিনীতা রোকার এলাকা থেকে দার্জিলিঙে জনসংযোগ শুরু করলেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। 

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:৪৩
Share:

ফাইল চিত্র।

একদা পুরনো সঙ্গী, বর্তমানে আবার বিমল গুরুং শিবিরের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র তথা নারী মোর্চা নেত্রী বিনীতা রোকার এলাকা থেকে দার্জিলিঙে জনসংযোগ শুরু করলেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে বিনয় তামাংপন্থী মোর্চার সচিব অনীত দার্জিলিং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলপুরী এলাকায় যান। কর্মীদের সঙ্গে এলাকা ঘোরার পর দলীয় বৈঠকও করেন। পানীয় জল থেকে রাস্তা, কাজকর্ম, নিকাশি-সহ সংগঠনের কী হাল, তা কর্মীদের থেকে শুনে নেন। এই এলাকার পুর কাউন্সিলর ছিলেন বিনীতা রোকা।

প্রতিদিন তিনি এক একটি এলাকায় যাবেন বলেও ঘোষণা করেন অনীত। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ সমস্যা, কষ্ট বুঝে কাজ করাটাই আমার দায়িত্ব। অনেকের মতো শুধু রাজনীতি বা লোকজনকে গালিগালাজ করাটা নয়। নতুন দার্জিলিং আমাদের তৈরি করতেই হবে।’’ তবে বিনীতাকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অনীত।

Advertisement

মোর্চা সূত্রের খবর, গুরুংয়ের জনসভা থেকে অনীত, বিনয়দের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বিনীতা। আবার রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলে ভোট দেওয়া নিয়ে তাঁর মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছিল গুরুং শিবিরে। ২০১৭ সালের পর মামলার জেরবার বিনীতা বিনয় তামাংয়ের সমর্থনে আসেন। তার আগে গুরুং থাকাকালীন তিনি দার্জিলিং মহকুমার নারী মোর্চার সভানেত্রী ছাড়াও গুরুংয়ের ঘনিষ্ঠ নেত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিন বছর পর গুরুং পাহাড়ে ফেরার আগেই শিবির বদল করেন। নতুন করে গুরুংয়ের সমর্থনে প্রচার এবং সংগঠনের কাজে নেমে পড়েন বিনীতা। দূরত্ব বাড়ে বিনয়, অনীতদের থেকে। আর বিনীতার কথায়. ‘‘পাহাড়ের অভিভাবক বিমল গুরুং। তাঁর নেতৃত্বেই আমাদের চলতে হবে। আর কে কী করল তা ভেবে মাথা ঘামিয়ে আমাদের লাভ নেই।’’

গত ২০ ডিসেম্বর দার্জিলিং ফিরেই মোটর স্ট্যান্ডে সভা করে বিনয়, অনীতকে পাহাড়-ছাড়া করার ঘোষণা করেন গুরুং। ২৬ ডিসেম্বর সোনাদা থেকে দার্জিলিং পদযাত্রা করে মোটর স্ট্যান্ড এলাকাতেই পাল্টা সভা করেন অনীত। কার্শিয়াঙের বাড়ির বদলে এ বার থেকে তিনি দার্জিলিং থাকবেন বলেও ঘোষণা করেন। গুরুংয়ের পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে পাহাড় ছাড়া করে দেখানোর কথা বলেন। গুরুং শিবির থেকে অবশ্য পরে পাহাড় ছাড়ার বিষয়টি থেকে পিছিয়ে আসা হয়েছে। কলকাতার শাসক দলের মধ্যস্থতায় রোশন গিরি জানিয়ে দিয়েছেন, কাউকে পাহাড়-ছাড়া করার প্রশ্ন নেই।

গুরুং দার্জিলিঙে পাতলেবাস অফিস নতুন করে খুলে সংগঠন সাজানোর কাজে নেমে পড়েছেন। ব্লক, ওয়ার্ড, এলাকা বা সমষ্টি ধরে ধরে রোজ বৈঠক হচ্ছে। কমিটি গঠন থেকে যুব মোর্চাকে সক্রিয় করে তুলছেন গুরুং। এই অবস্থায় নিজেদের সংগঠনকে ধরে রাখতে দার্জিলিঙে ঘাঁটি গেড়েছেন অনীত। বিনয় তামাং পেটের অস্ত্রোপচারের পর পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় দার্জিলিঙের রাজনৈতিক মাঠ গুরুংকে ফাঁকা ছাড়তে নারাজ অনীত। তাই মুখে উন্নয়নের কাজের কথা বললেও টানা শৈলশহরে বসে পাল্টা সংগঠনের কাজ অনীত শুরু করে দিয়েছেন বলে পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন।

অনীত বলেছেন, ‘‘শৈলশহরের নতুন করে গোলমালের আশঙ্কায় আতঙ্কিত অনেক পাহাড়বাসী। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে মানুষকে আশ্বস্ত করে উন্নয়নের কাজ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন