may day

শ্রম নেই, তাই দিবসও ধূসর

এ বছর শ্রমদিবসের আগে বুক ভার। দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে জাহিদুলকে। লকডাউনের বাকিদিনগুলিতে ছেলেমেয়েদের পেটে ভাত জোগাতে পারবেন তো!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২০ ০৬:১৬
Share:

মাথায় হাত: লকডাউন, নেই কাজ। চিন্তিত এক শ্রমিক। ছবি: সন্দীপ পাল

সাত সকালে ইউনিয়ন অফিসে যেতে হত। পতাকা তোলার পর, গরম-নরম বক্তৃতা। অনেকে ইতিউতি সরে পড়লেও, জাহিদুল মন দিয়ে সে সব শুনত। শেষে মিষ্টির প্যাকেট হাতে বাড়ি ফেরা। সেই প্যাকেট নিয়ে ছেলেমেয়েদের হুড়োহুড়ি দেখে, হাসিতে মুখ ভরে যেত তাঁর। কিন্তু এ বছর শ্রমদিবসের আগে বুক ভার। দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে জাহিদুলকে। লকডাউনের বাকিদিনগুলিতে ছেলেমেয়েদের পেটে ভাত জোগাতে পারবেন তো!
জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া কোনপাকড়িতে রাজমিস্ত্রি জাহিদুলের বাড়ি। মাসখানেক কাজ বন্ধ। সঞ্চয় ভেঙে সংসার চলছে। তাও শেষের দিকে। আজিজুল ইট গেঁথে বাড়ি তৈরি করেন। বাড়ি রঙের কাজ করেন পিন্টু। সকলেরই প্রশ্ন, লকডাউন কবে উঠবে? আবার কবে কাজে বেরতে পারবেন তাঁরা? শ্রম দিবসের আবেগ ছাপিয়ে, তাঁদের ভাবনায় কাজে ফেরার আকুতি। অপেক্ষার দিনগোণা।
পিন্টু বললেন, “রঙের কাজে যাঁদের কাছে টাকা পেতাম, তাঁরা বলছেন লকডাউনে তাঁদেরও কাজ বন্ধ। তাই পরে টাকা দেব। আমারও তো কাজ বন্ধ। আমার সংসার চলবে কী করে?” গত মাসে রেশনের চাল-আটা পেয়েছিলেন। তা শেষ হতে বেশিদিন সময় লাগেনি। একটি সংগঠন থেকে চাল, ডাল দিয়েছিল। সেটাই আপাতত চলছে। শেষ হলে, স্ত্রীর দু’গাছা সোনার চুড়ি বন্ধক রাখবেন বলে ঠিক করেছেন।
জলের পাইপ লাইনের কাজ করেন রঞ্জিত সুত্রধর। ঘরে চাল বাড়ন্ত। বিপন্ন মুখে প্রশ্ন করলেন, “কয়েকদিন কাজ বন্ধ থাকলেই, এ দেশে শ্রমিকদের এমন দুর্দশা হয়। তা হলে, কী ঘটা করে এমন শ্রমদিবস পালনের কোনও প্রয়োজন আছে কি?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন