নজরদারি: ময়নাগুড়ি জুড়েই শুক্রবার ছিল পুলিশি টহল। পুলিশ টহল দেয় সুভাষনগর হাইস্কুলের সামনেও। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
যাঁকে একদিন আবিরে রাঙিয়ে দিয়েছিল ময়নাগুড়ি, এখন তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে।
মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে এলাকার একদা প্রিয় প্রধানশিক্ষক হরিদয়াল রায়কে নিয়ে চিন্তায় ময়নাগুড়ি। দিনভর থমথমে পরিবেশ ছিল সুভাষনগরের স্কুলে। আতঙ্ক এবং উৎকন্ঠা চেপে বসছে ছাত্র-অভিভাবকদের মধ্যেও।
পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, প্রশ্নপত্র ফাঁসকে ঘিরে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে কারণেই প্রধান শিক্ষকের বাড়ি এবং স্কুলের সামনে টহলদারি চলছে। যদিও পুলিশের এই ‘তৎপরতা’ নিয়ে নানা জল্পনাও রয়েছে। কৌতূহল কমেনি সেখানে৷ গোটা ঘটনায় তাদের এলাকার মেধাবী ছাত্রের নাম জড়ানোয় কার্যত ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছেন জল্পেশ মোড় এলাকার বাসিন্দারা৷
জল্পেশ মোড়ের বাসিন্দা ধীরাজ বর্মন, মিঠুন রায়দের প্রশ্ন, স্কুলে শিক্ষকদের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে পড়ুয়াদের নাম কেন জড়ানো হবে? স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছাত্রের নাম নিয়ে জল্পনা না থামলে তাঁরা প্রয়োজনে পথে নেমে আন্দোলন করবেন।
থমথমে স্কুলে এ দিন স্বাভাবিক ক্লাস হলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল কম। শিক্ষকদের অনেকের দাবি, একাদশ শ্রেণির কিছু পড়ুয়া অন্য স্কুলে ভর্তির চেষ্টা করতেও শুরু করেছে৷ যদিও তা মানতে চাননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দিন স্কুলের সামনে পুলিশের টহলদারি শুরু হতে অস্বস্তি আরও বেড়েছে।
টহল: হরিদয়ালের বাড়ির সামনেও পাহারা। —নিজস্ব চিত্র
সুভাষনগর হাইস্কুলের সামনে পৌঁছতেই ক্লাসের ভিতর থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন৷ স্কুল সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন বাড়ির বাসিন্দারাও তখন বাড়ির বাইরে ভিড় করেছেন৷ আশঙ্কায় রয়েছেন অভিভাবকরাও। স্কুলের এক মেধাবী ছাত্রের বাবা সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে ছেলেকে নিয়ে দার্জিলিং বেড়াতে যাব৷ কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে করে এখন ওই পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছি৷’’ আরেক মেধাবী ছাত্রীর কথায়, ‘‘পরীক্ষা শেষের পর নিশ্চিন্তে কয়েকদিন ঘুমাব বলে ঠিক করেছিলাম৷ কিন্তু এখন ঘুম উড়ে গিয়েছে৷ আগামী মাসে নেপাল যাওয়ার কথা৷ সেটাও হবে কিনা জানি না৷’’
এ দিন প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পরেই ময়নাগুড়িতে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী পৌঁছয়। জেলার পুলিশ কর্তারাও পৌঁছন ময়নাগুড়িতে৷ শুরু হয় পুলিশ ও র্যাফের টহলদারি৷