আলু ও ধানের বিকল্প হিসেবে কলা, বোয়া কুল ও আপেল কুল চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন মেচবিল এলাকার চাষিদের একাংশ। রাজ্য জুড়ে যখন আলু চাষ করে আশঙ্কায় দিন গুনছেন চাষিরা, সেই সময় বিকল্প হিসেবে ফল চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্থিতিশীল একটা জায়গা ধরে রেখেছেন আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের মেচবিল এলাকার চাষিরা। বছর দুয়েক আগে উদ্যান পালন বিভাগের পরামর্শে প্রথাগত ধান,আলুর সঙ্গে কলা ও কুলের চাষ শুরু করেন অলিপ রায়, গৌরাঙ্গ সরকার, নীহার মিত্র, দেবকান্ত বর্মনরা। এতে যেমন বাজারের অনিশ্চয়তা থেকে রেহাই মিলেছে, লাভও করছেন তাঁরা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত চাষি একই সঙ্গে একই ফসল চাষ করায় উত্পাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কমছে দাম। এতে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। এ বছর আলুর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটেছে।
আলিপুরদুয়ার জেলার দায়িত্বে থাকা জলপাইগুড়ি জেলার উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিক শুভাশিষ গিরি বলেন, “আমরা বার বার পরামর্শ দিচ্ছি চাষের জমির একটা অংশে ফল চাষ করতে। এতে অন্য ফসলের ক্ষতি হলেও ফল সেই ক্ষতি অনেকাংশে পুষিয়ে দেবে। কারণ ফলের বাজার স্থিতিশীল।” তাঁর বক্তব্য, মেচবিল এলাকায় বছর দুয়েক আগে টিসু কালচারের মাধ্যমে কলা, বোয়া কুল, আপেল কুলের মত ফল চাষে চাষিদের উত্সাহিত করা হয়েছিল। এখন বেশ কয়েক জন চাষি কলা ও কুল চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। পাশাপাশি গোলমরিচ, লেবু, পেয়ারার মত ফল চাষ করেও কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। কলা ও কুল চাষের ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে ভর্তুকিও দেওয়া হয়।
এলাকার কৃষক দেবকান্ত বর্মন বলেন, “এলাকার প্রায় ১০০ কৃষককে নিয়ে তৈরী হয়েছে প্রান্তিক ফার্মাস ক্লাব। আমাদের সংগঠনের মূল লক্ষ্য, প্রথাগত চাষে দিন দিন যে অনিশ্চয়তা বাড়ছে তা থেকে কৃষকদের আড়াল করতে বিকল্প চাষের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা। এলাকার প্রায় ৫০-৬০ বিঘা জমিতে কলা ও কুলের চাষ করা হয়েছে। গতবছর লাভের মুখও দেখেছেন চাষিরা। বাকিরাও এতে উত্সাহিত হচ্ছেন। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের উদ্যান পালন বিভাগের কর্মী দেবাশিস পোদ্দার জানান, জি ৯ কলা এক বিঘা জমিতে চাষ করতে খরচ পড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। ওই গাছ বছরে এক বার যা ফল দেয় তাতে বিঘা প্রতি লাভ হয় প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা। কুল চাষ করেও একই ভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।