শিলের ঘায়ে জখম পাঁচশো পরিযায়ী উধাও রাতারাতি

আচমকা শিলাবৃষ্টি শুরু হওয়ায় পালিয়ে নিরাপদ জায়গায় যেতে পারিনি পরিযায়ী পাখিরা। শিলের আঘাতে জলাশয়ের জলেই লুটিয়ে পড়ে তারা। মিনিট পনেরো পরে বৃষ্টি থেমে গেলে জখম পাখিদের ধরে বস্তাবন্দি করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

সকালে-সাঁঝ: তখন বেলা ৯টা। নামল বৃষ্টি। মনে হল যেন রাত ৯টা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

আচমকা শিলাবৃষ্টি শুরু হওয়ায় পালিয়ে নিরাপদ জায়গায় যেতে পারিনি পরিযায়ী পাখিরা। শিলের আঘাতে জলাশয়ের জলেই লুটিয়ে পড়ে তারা। মিনিট পনেরো পরে বৃষ্টি থেমে গেলে জখম পাখিদের ধরে বস্তাবন্দি করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ এমনই ঘটনা ঘটে কোচবিহারের দিনহাটার গোসানিমারি এলাকায়। বন দফতর ও প্রশাসনের লোকজন গিয়েও জখম পাখি উদ্ধার করতে পারেননি। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” কোচবিহার ডিএফও বিমান বিশ্বাস বলেন, “জখম পাখি পাওয়া যায়নি।”

গোসানিমারির কোদালধোওয়া এলাকায় ওই জলাশয়। পদ্মপুকুর নামেও এলাকায় পরিচিত। সেই জলাশয়ে প্রতি বছর হাজার হাজার পরিযায়ী ভিড় করে। রাজপাট, শালবাগান থেকে কামতেশ্বরী মন্দিরের টানে কেউ গোসানিমারি গেলে একবার হলেও ওই জলাশয় ঘুরে যায়। ওই জলাশয় এর আগেও পরিযায়ী পাখি শিকার করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিযায়ী শিকারের একটি চক্র দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকায় সক্রিয়। এ দিন সেই চক্রের সদসদ্যরাই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। শিলের প্রকোপ এতটাই ছিল যে মাথা ও পাখায় আঘাত লেগে লুটিয়ে পড়তে থাকে অনেক পাখি। বেশ কিছু পাখি গাছের মধ্যে ছিল। সেখান থেকেও সেগুলি লুটিয়ে পড়ে নীচে। সেই সময়ই বস্তা ও ব্যাগ ভর্তি করে পাখি নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ।

ওই এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মানিক বর্মন বলেন, “পাখি বস্তায় ভরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা এলাকায় যাই। তার আগেই সব পালিয়ে যায়। কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা দেখা হচ্ছে।’’ দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী জানান, একটি পাখিকে উদ্ধার করে বন দফতরকে দিয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “পাঁচশোটির বেশি পাখি জখম হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এত পাখি কারা নিয়ে গেল, তা দেখা হচ্ছে।” ওই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পরিবেশপ্রমীরা। গোসানিমারি নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক প্রদীপ ঝা বলেন, “পরিযায়ী পাখিদের রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এই ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন