সমর্থক: কৃষ্ণা রায়। নিজস্ব চিত্র
উন্নয়নের বার্তা দিতে গিয়ে উন্নয়ন নিয়ে দলীয় সমর্থকেরই প্রশ্নের মুখে পড়লেন মন্ত্রী! বুধবার ডাবগ্রামের আশিঘরে এই ঘটনায় প্রথমে বেজায় চটে যান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। দলের ওই মহিলা সমর্থকের হাত থেকে পতাকা কেড়ে নিতেও বলেন। পরে অবশ্য দু’জনে কথা বলেন। পতাকা নিয়ে ওই সমর্থক মিছিলেও যোগ দেন।
উন্নয়নের বার্তা দিতে ‘মানুষের কাছে চলো’ কর্মসূচি নিয়ে ডাবগ্রাম-২ এলাকায় পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের নেতৃত্বে বুধবার মিছিল করে তৃণমূল। আশিঘরের কাছে জয়কান্ত স্কুলের মাঠ থেকে ওই মিছিল শুরু হয়। এ দিন মিছিলের আগেই শান্তিনগর এলাকায় হাউজিং কলোনি লাগোয়া রাস্তার কাজ ৩৪ বছর ধরে হচ্ছে না বলে মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন কৃষ্ণা রায় নামে দলেরই এক মহিলা সমর্থক। মন্ত্রী তাঁকে বোঝাতে চান। তবে মহিলা বারবার অভিযোগ করতে থাকলে মন্ত্রী তাঁর হাত থেকে পতাকা নিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। তাঁকে চলে যেতে বলেন।
পরে অবশ্য মন্ত্রী ওই সমর্থককে ডেকে বলেন, ‘’৩৪ বছর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম না। আমরা আসার পর উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। ওই রাস্তার কাজের টেন্ডার হয়েছে। ঠিকাদারকে দেরি করছে বলে তাকে শো-কজও করা হয়েছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়নকর্তৃপক্ষের তরফে ওই কাজ শীঘ্রই করা হবে।’’
এলাকার এক সময়ের তৃণমূল নেত্রী শিখা চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এলাকায় জমির দালালের দৌরাত্ম্য নিয়ে তিনি সরব হয়েছিল। জমির দালালদের হাতে মার খেয়ে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি হতেও হয়েছিল। দলের একাংশের মদতেই জমির দালালদের রমরমা বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সরব হয়েছিল। তিনি চলে যাওয়ায় এই এলাকায় দলের কিছুটা ক্ষতি হবে বলেই নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন। তার উপরে এ দিনের ঘটনা এলাকার উন্নয়ন নিয়ে ক্ষোভের প্রকাশ বলেই বিরোধীদের দাবি।
গৌমতবাবুর অবশ্য জানাচ্ছেন, ডাবগ্রাম এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘চার বছর আগে নকশালবাড়ি থেকে ‘মানুষের কাছে চলো’ অভিযান শুরু হয়েছিল। এই এলাকাতেও বুথে বুথে গিয়ে অনেক জায়গায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সুবিধা অসুবিধার বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হয়েছিল। একই ভাবে এখন তা করা হচ্ছে।’’
এ দিন সাত কিলোমিটার হেঁটে ১৫টি বুথ এলাকা ঘোরে মিছিল। দলের তরফে জানানো হয়, এই বিধানসভার গ্রামীণ এলাকার ১১৭ টি বুথেই যাওয়া হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টি দেখা হবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘অনেক কাজ হয়েছে। আরও অনেক কাজ করতে হবে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই উন্নয়ন হবে।’’
এ দিনের মিছিল থেকে বিজেপি’র বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মন্ত্রীর অবশ্য দাবি, নির্বাচনের কথা ভেবে যে এই কর্মসূচি, তা নয়। তাঁরা নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে থাকেন।