শিল্প-কারখানার জন্য সরকারি জমি নিয়ে দিনের পর দিন ফেলে না রেখে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের অনুরোধ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আগামীতে তা না হলে সরকারকে আইনি রাস্তায় যাওয়ার কথা ভাবতে হবে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যায় মার্চেন্ট চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির তরফে ‘নর্থবেঙ্গল ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম-২০১৮’ আয়োজন করা হয়। চা বাগান, পর্যটন, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উদ্যানপালন, মাঝারি শিল্পের সম্ভাবনা-সমস্যা নিয়ে ফোরামে আলোচনা হয়েছে।
গত দু’বছরে একাধিক বাণিজ্য সম্মেলনে রবীন্দ্রনাথবাবু ছাড়াও পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব শিল্পপতিদের কাছে জমি ফেলে না রাখার অনুরোধ আগেও করেছেন। তাতেও খুব একটা কাজ হয়েছে বলে শিল্পের সঙ্গে জড়িতেরা মনে করেন না। অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গের বিদ্যুৎ, জমি, যাতায়াত ব্যবস্থা-সহ সামগ্রিক পরিকাঠামো আমূল বদলে গিয়েছে বলে দাবি করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ বদলে গিয়েছে। আমরা ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের জমি ফেলে না রাখার অনুরোধ করে আসছি। কোনও সমস্যা হলে আমাদের বলুন, তা মেটানো হবে। জমি নিয়ে ফেলে রেখে দেব, এটা হয় না।’’
মন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের অন্তত ২ হাজার এমন প্লট চিহ্নিত হয়েছে। নানা জমির পরিমাণের সেগুলি রয়েছে। সরকার ধীরে চলছে। কাজ না হলে আগামী দিনে সরকারকেও আইনের রাস্তায় যেতে হবে। উল্লেখ্য, সরকারি জমি নিয়ে তিন বছরের মধ্যে কাজে নামতে হয়। নইলে আইনের সাহায্যে সরকার তা ফেরত নিতে পারে। অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের অনুষ্ঠানে থাকার কথা ছিল। কিন্তু একাধিক কর্মসূচি থাকায় পর্যটনমন্ত্রী উত্তরকন্যায় যেতে পারেননি।
সন্ধ্যায় পর্যটনমন্ত্রী মাটিগাড়ার একটি অভিজাত হোটেলে বেঙ্গল ট্রাভেল মার্ট-২০১৮ উদ্বোধন করেন। ছিলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, জেমস কুজুরেরাও। সেখানে উত্তরবঙ্গের পর্যটন বিকাশে সরকারের প্রকল্প, নীতির কথা বলেন গৌতমবাবু। তেমনই, বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য ১১৬ একর জমির ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রকল্পের জমির ব্যবস্থা করতে আমরা আন্তরিক। বিমানবন্দর তার উদাহরণ। আরও জমির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুষ্ঠানে থাকার কথা থাকলেও তিনি ব্যক্তিগত কাজের জন্য যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।
দুপুরে উত্তরকন্যায় ইনভেস্টমেন্ট ফোরামে পর্যটন নিয়ে আলোচনায় রাজ বসু, সম্রাট সান্যাল, পার্থ গুহ’রা বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। পর্যটন ও বন দফতরের মধ্যে সমন্বয়, হোমস্টের জন্য সরকারি ব্যবস্থা, পাহাড়-জঙ্গল ছাড়াও বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র তৈরির উপর তাঁরা জোর দেন। সিকিম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের উদাহরণও টেনে আনেন। চা নিয়ে আলোচনায় জমি নীতি, সরকারি ভর্তুকি-সহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিজয়গোপাল চক্রবর্তী ছাড়া অন্য বক্তারাও।