শহরের বুকে থেঁতলে খুন দম্পতিকে

বাড়ির দোতলায় ঘরে ঢুকে এক দম্পতিকে কুপিয়ে, মাথা থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল। শনিবার গভীর রাতে বাগডোগরা থানার প্রধাননগর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত দম্পতির নাম অজয় খুশওয়া (৩৫) এবং তাঁর স্ত্রী মিনা খুশওয়া (৩২)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

শোক: আত্মীয়ের কোলে মৃত দম্পতির এক সন্তান। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির দোতলায় ঘরে ঢুকে এক দম্পতিকে কুপিয়ে, মাথা থেঁতলে খুন করার অভিযোগ উঠল। শনিবার গভীর রাতে বাগডোগরা থানার প্রধাননগর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত দম্পতির নাম অজয় খুশওয়া (৩৫) এবং তাঁর স্ত্রী মিনা খুশওয়া (৩২)। একটি ঘরে বিছানায় উপুড় হয়ে পড়েছিল অজয়ের দেহ। অন্য একটি ঘরে বিছানা থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর স্ত্রী মিনার মুখ থেঁতলানো রক্তাক্ত দেহ। মিনার পাশেই তাঁদের সন্তানেরা ঘুমিয়ে ছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে মৃত দম্পতির পরিবার ও কর্মীরা।

Advertisement

ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাড়ি ও তার সামনের রাস্তা ধরে কুকুর লাগোয়া চা বাগান পর্যন্ত গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মিনার মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী ও ভোঁতা কিছু দিয়ে মিনার মুখচোখ থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। অজয়ের মাথার পিছনেও ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। কোনও কারণে ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে এই ঘটনা বলে পুলিশের সন্দেহ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনা সকালে এলাকায় যান। পরে ডিসি (পশ্চিম) তরুণ হালদার বলেছেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।’’

অজয়ের মূল বাড়ি উত্তরপ্রদেশ। মিনার বাপের বাড়ি ওই পাড়াতেই। তাঁদের মূল কাজ ছিল নানা ক্যাটারিং সংস্থায় পুরুষ ও মহিলা কর্মী সরবরাহ করা। অজয় বছর দুয়েক হল একটি তিনতলা বাড়ি করেছেন। পাশেই তাঁদের একটি ভাড়া বাড়িও রয়েছে। সংস্থার মহিলা কর্মী রাতে ফিরলে অজয়ের নতুন বাড়িতেই থাকতেন। পুরুষকর্মীরা পাশের ভাড়াবাড়ির নীচতলায় থাকতেন। অজয়ের সংস্থার কর্মী অর্জুন কর্মা বলেন, ‘‘রাতে ফিরে এসে আমরা বেল বাজালে দাদা দরজার চাবি দিতেন।’’ কর্মীদের দাবি, গতকাল রাত দেড়টা থেকে পৌনে দু’টো নাগাদ তাঁরা কাজ সেরে ফিরে অজয়ের নতুন বাড়ির সামনে এলে দেখেন, দরজার তালা খোলা। বিদ্যুতের লাইনও কাটা। সংস্থার আরও এক কর্মী অনুষ্কা বিশ্বকর্মা বলেন, ‘‘বাড়ির উপরে গিয়ে দেখি, দাদা আর দিদির বিছানা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। দিদির পাশেই শুয়ে ছিল দু’টো বাচ্চা।’’ কিছু সোনার গয়না ও প্রায় দু’লক্ষ টাকা উধাও বলে দাবি করেছেন সংস্থার কর্মীরা। বহুতলের তিনতলায় ক্যাটারিংয়ের এক মহিলা ছিলেন। কিন্তু তাঁর ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো ছিল।

Advertisement

শোকে ডুবে রয়েছে পুরো পরিবার। মিনার মা দেওকুমারী রাই, পড়শিরা ও ক্যাটারিং সংস্থার কর্মীদের দাবি, কিছুদিন আগে ভাড়া বাড়িতে অন্য এক ভাড়াটের সঙ্গে জল ব্যবহার করা নিয়ে অজয়ের ব্যাপক ঝামেলা হয়েছিল। দেওকুমারী দেবীর কথায়, ‘‘ওই আমার ছেলেকে লোক দিয়ে খুন করবে বলে হুমকিও দিয়েছিল। মহিলার স্বামীও সেনা জওয়ান। পুলিশকে আমরা সব বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন