ফাইল চিত্র।
হস্টেলে খাদ্য সঙ্কট শুরুর আভাস পেয়েই পাহাড়ের স্কুলগুলিকে তা খালি করার জন্য সময় বেঁধে দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ বুধবার সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেন, আগামী শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আবাসিকদের নিয়ে পাহাড়ের হস্টেল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। ওই যাতায়াতের পথে গাড়িতে ‘স্কুল ডিউটি’ লেখা থাকলে কোথাও বাধা দেওয়া হবে না।
স্কুল মালিকদের কয়েকজন জানান, বর্ষার সময়ে ২৪ জুন থেকে পাহাড়ে গ্রীষ্মের ছুটি হওয়ার কথা ছিল। তার একদিন আগেই সকলকে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ায় সমস্যা হবে বলে অনেকের ধারণা। তবে টানা বন্ধের জেরে হস্টেলে খাদ্যসঙ্কট শুরু হওয়ার জেরে অনেক স্কুলেই সমস্যা হচ্ছিল। বিশেষ করে, দুধের জোগান না থাকায় পড়ুয়াদের অনেকেরই সমস্যা হচ্ছিল। এমন আরও কদিন চললে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের অবনতির আশঙ্কাও করছিলেন কর্তৃপক্ষ। সে খবর পৌঁছে গিয়েছিল মোর্চার নেতাদের কাছেও। তার জেরেই তড়িঘড়ি মোর্চার পক্ষ থেকে ওই ফতোয়া দেওয়া হয় বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের অনেকের অনুমান।
এ দিন খবর পৌঁছনোই মাত্র শিলিগুড়িতে স্কুলগুলির তরফে গাড়ি ভাড়া করার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। ‘স্কুল ডিউটি’তে যাতায়াতের জন্য মোটা টাকা ভাড়া হাঁকার অভিযোগও পৌঁছেছে প্রশাসনের কাছে। দার্জিলিঙের স্কুল বাস মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষ চাইলে তাঁরা সমতলে পৌঁছে দিতে রাজি রয়েছেন। তবে অভিভাবকদের অনেকেই নিজের দায়িত্বে ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে নিতে চাইছেন।
যেমন, বাংলাদেশের পঞ্চগড়, রংপুর, ঢাকার কয়েক হাজার পড়ুয়া দার্জিলিঙে থেকে পড়াশোনা করে। সেখান থেকে শিলিগুড়ি, দার্জিলিঙে ঘনঘন খবরাখবর নিচ্ছেন উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। শিলিগুড়ির হোটেলে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন ঢাকার একদল বাসিন্দা। তাঁরা জানান, ২৪ জুন পাহাড়ে গিয়ে ছেলেদের আনার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। এ দিন মোর্চার ফতোয়ার খবর পেয়ে তাঁরা ২৩ জুন ভোরেই দার্জিলিঙে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের সাংসদ নাজিমুল হক প্রধান এ দিন ফোনে বললেন, ‘‘আমাদের দেশের কয়েক হাজার পড়ুয়া দার্জিলিঙে পড়ে। উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। অনেকটাই উদ্বেগে আছি।’’