যুবককে খুনে অভিযুক্ত মা-বোন-স্ত্রী

এক যুবককে বাড়ির মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে তাঁর মা, দিদি এবং স্ত্রীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ভক্তিনগর থানার আশিঘর ফাঁড়ির ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া নিরঞ্জন নগরের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

ভক্তিনগরে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র

এক যুবককে বাড়ির মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে তাঁর মা, দিদি এবং স্ত্রীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ভক্তিনগর থানার আশিঘর ফাঁড়ির ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া নিরঞ্জন নগরের ঘটনা। নিহত ধ্রুতিমান দাস (৩০) পেশায় মাছ ব্যবসায়ী।

Advertisement

ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপ অবস্থায় পরিবারের লোকজনের উপর অত্যাচার চালাতেন বলে অভিযোগ। ধৃতদের অভিযোগ, জুয়ার নেশায় আয়ের বেশিরভাগ অংশই উড়িয়ে দিচ্ছিলেন ধ্রুতিমান। রোজ রাতে নেশা করে এসে পরিবারের বাকি সদস্যদের মারধর, চি‌ৎকার চেঁচামেচি করতেন তিনি। রবিবার রাতে ৩০ হাজার টাকার জন্য অশান্তি শুরু হয়। সবাইকে মারধরও করেছিলেন বলে অভিযোগ। তার পরেই ধস্তাধস্তির সময় ঘটনাটি ঘটেছে।

পরিবারে তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয় ধ্রুতিমান আত্মঘাতী হয়েছেন। দেহটি দড়ি থেকে নামিয়ে বাড়ির উঠানেও রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেশীদের অনেকের বিষয়টিতে সন্দেহ হয়। এর পরেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গোটা পরিবার মিলে ছেলেটিকে মেরেছে বলেই মনে হচ্ছে। শ্বাসরোধ হওয়াতেই মৃত্যু বলে মনে হচ্ছে। তিন জনকে ধরা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ধ্রুতিমান একটি গাড়িও কিনেছিলেন। সম্প্রতি সেটিকে জুয়ার আসরে বন্ধক রেখে আসেন বলে অভিযোগ। সেটিকে ছাড়ানোর জন্য প্রয়োজন ছিল ৫০ হাজার টাকা। তা জোগাড় করতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। নিহতের বাবা সুশীলবাবু রান্নার কাজ করেন। তিনি ছেলেকে ওই টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর পরেই স্ত্রী যশোদা, মা ফলতা এবং দিদি দুর্গার উপর ওই যুবক অত্যাচারের মাত্রা বাড়ায় বলে অভিযোগ। ধৃতেরা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, গোলমালের সময় ধ্রুতিমান দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী হতে যায়। সেই সময় মারামারি, ধস্তাধস্তিতে সে মারা যায়। যদিও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মারামারির সময় কোনও ভাবে শ্বাসরোধ হয়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। পরে তাঁকে দড়িতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হয়ে থাকতে পারে।

ঘটনার জেরে সকালে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। বাসিন্দাদের একাংশ দোষীদের শাস্তি চান। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। নিহতের এক প্রতিবেশী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তার পরেই ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন