গোলমাল: জল সমস্যা নিয়ে মেয়রের বিবৃতির প্রতিবাদে হট্টগোল চলল বোর্ড মিটিংয়ে। ছবি: স্বরূপ সরকার
পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে মেয়র মিথ্যে বিবৃতি দিচ্ছেন অভিযোগে বোর্ড মিটিংয়ে সরব হল তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুরসভার সভাকক্ষে তা নিয়ে হট্টগোল বাঁধে। বিরোধী কাউন্সিলর কৃষ্ণ পালের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। সভায় প্রায় আধ ঘণ্টা গোলমাল, হট্টগোল চলে। মেয়র মাসের অধিকাংশ সময়ই শহরে থাকেন না বলে সরব হন। মেয়রের দাবি, পুলিশ, প্রশাসন সমস্তই তৃণমূলের হাতে। বামেরা শিলিগুড়ি পুরসভায় টিমটিম করে জ্বলছে। তার পরেও নানা ভাবে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যে মেয়রের দল বিরোধী শিবিরে বলে তাঁকে প্রতিদিন অপমান সহ্য করতে হবে কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনে জিতে পুরসভায় ক্ষমতায় এসে আমরা কী অন্যায় করেছি? রাজ্যে তৃণমূল শাসকদল বলে তাদের সব কিছু সহ্য করতে হবে? প্রতিটি সভায় তাঁরা অপমান করছেন, কখনও দফতরে ঢুকে অভিযোগ জানানোর নামে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করছেন। জীবনের শেষ পর্যন্ত আমি এর প্রতিবাদ করে যাব। তাঁদের ক্ষমতা থাকলে তাঁরা পুরবোর্ড ভেঙে দিলেই তো হয়।’’ তিনি জানান, বিধায়ক হিসাবে কাজের জন্যই তাঁকে অনেক সময় কলকাতায় যেতে হয়।
কৃষ্ণবাবুর অভিযোগ, তাঁর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের জলাধার থেকে জ্যোতিনগরে জল সরবরাহ করতে পাইপলাইনের কাজ হচ্ছিল। পাইপ লাইনের কাজের জন্য তাঁর ওয়ার্ডে রাস্তা খোঁড়া, কালভার্ট ভাঙা হয়েছিল। তিনি না জানায় জানতে চেয়েছিলেন। অথচ তিনি বাধা দেওয়াতেই তা আটকে পড়েছিল বলে মেয়র কেন মিথ্যে বিবৃতি দেন, তার জবাব চান। চেয়ারম্যান জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদকে জবাব দিতে বললে কৃষ্ণবাবু ও বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকাররা জবাব মেয়রকেই দিতে হবে বলে সরব হন।
শেষে মেয়র জানান, জল সরবরাহের বর্তমান পরিস্থিতি এবং তা নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে তিনি লিখিত ভাবে এ দিন সভায় জানিয়েছেন। এর বাইরে কিছু বলার নেই। মেয়রের কাছ থেকে সদুত্তর না পেয়ে ফের হট্টগোল শুরু হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে বলে কৃষ্ণবাবু সরব হন। পানীয় জল সরবরাহ বিপর্যস্ত হওয়া, শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতির জন্য মেয়রকে দায়ী করে তাঁর পদত্যাগ চেয়ে সরব হন বিরোধীরা। মেয়র দুর্নীতিতে যুক্ত বলে সরব হন। উত্তেজিত হয়ে মেয়র কৃষ্ণবাবুর উদ্দেশ্যে জানান, কৃষ্ণবাবু কী করেছেন সে সবও তিনি জানেন। গোপন না করে মেয়র কী জানেন তা সকলের সামনে বলার দাবিতে ফের সরব হন কৃষ্ণবাবু।
সম্প্রতি ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে হামলার ঘটনা নিয়ে এ দিন সিপিএম কাউন্সিলর স্নিগ্ধা হাজরা নিন্দা করেন। তৃণমূল-সহ অন্য কাউন্সিলররা জানান ওই ঘটনাকে তাঁরাও সমর্থন করেন না।