হিমেল হাওয়া বইছে। মাঝেমধ্যে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। এমন আবহাওয়ায় ভিড় উপচে পড়ছে দার্জিলিঙে। কেভেন্টার্সই হোক বা গ্লেনারিস, বসার জায়গা পেতে আগে সামিল হতে হচ্ছে লম্বা লাইনে। বেড়ানোর ফাঁকে পর্যটকরাও খোঁজ নিচ্ছেন দার্জিলিঙের পুরভোটের। বেড়ানোয় কোনও বিঘ্ন ঘটবে না তো?
সে সব খবর পেয়েই আসরে নেমেছেন খোদ দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, পুর এলাকায় ভোটের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। ভোটাররা ভোট দিয়ে আশেপাশে ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। সোজা বাড়ি চলে যেতে হবে। তবে পর্যটকদের কোনও অসুবিধে নেই। তাঁরা নির্বিঘ্নে বেড়াতে পারেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা হলে সরাসরি আমাদের যোগাযোগ করতে পারেন।’’ তিনি জানান, সব থানার অফিসারদেরও পর্যটকদের সুবিধা অসুবিধার দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’
দমদম থেকে স্ত্রী নিবেদিতা ও ছেলে রাজদীপকে নিয়ে পাহাড়ে ঘুরতে এসেছেন রঞ্জিৎ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘ভোট মানেই টানটান উত্তেজনা বুঝি। কিন্তু এখানে এমন মনে হচ্ছে না। পোস্টার ব্যানার ভোট একদিকে, পর্যটন আরেক দিকে। ভাল লাগছে।’’ বহরমপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায় জানান, ‘‘পাহাড়কে পাহাড়ের মতোই উপভোগ করছি। দারুণ আবহাওয়া।’’
দিনভর ভানু ভবনে কাটালেও ভোটের তদারকির সঙ্গেই পর্যটকদের খোঁজ খবর নেন খোদ মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। সঙ্গে ছিলেন রোশন গিরি, বিনয় তামাঙ্গরা। বিনয় বলেন, ‘‘গরমের মরসুম পড়তেই পাহাড় এখন পর্যটক ভরা। ভোট তো আসবে যাবে। কিন্তু এখানকার পর্যটন বান্ধব ছবিটাকে ঠিক রাখতেই হবে।’’
মে থেকে মোটামুটি দু’ মাস পাহাড়ে ভরা মরসুম। কিন্তু এ বার মার্চ এপ্রিল থেকেই পাহাড়ে পর্যটকের ঢল। এ দিনও দার্জিলিং এর ক্লাব সাইড, মোটরস্ট্যান্ড, লাডেনলা রোড, ম্যাল, এমজি রোড পর্যটকদের বোঝাই। খাদের ধারে সেলফি, ঘোড়ায় চড়া, মোমো খাওয়া, শীত পোশাক কেনাকাটা, বাদ নেই কিছুই। পর্যটন সংগঠন এতোয়ার সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন,‘‘দেশের অন্য প্রান্তে ভোট হলে সেখানে পর্যটকরা সাধারণত যেতে চান না। ব্যতিক্রম দার্জিলিং।’’
ভোটের দিন পর্যটক বাদে বহিরাগতরা শৈলশহরে থাকতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তাই থাকতে পারবেন না বিমল গুরঙ্গ, বিনয় তামাঙ্গরাও। কারণ, ওঁরা পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার। আগেই পাহাড় ছেড়েছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।