চা-দোকানে রাত কাটিয়ে সকালে আত্মসমর্পণ সোহেলের

নদীর চর দখলকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে বুধবার ওদলাবাড়িতে ঘিস নদীর ধারে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হন মহম্মদ ইলিয়াস নামের এক যুবক৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

ধৃত: থানায় সোহেল। নিজস্ব চিত্র

ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ ধরে ফেলতে পারে৷ সে জন্য রাতের বেলাতেই তিস্তা ব্যারেজ এলাকা থেকে মোবাইল ছুড়ে নদীতে ফেলে দিয়েছিল ওদলাবাড়িতে যুবক খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সোহেল সরকার৷ কিন্তু এক বন্ধুর কথাতেই আর না পালিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের কাছে ধরা দেয় সে৷ যদিও আত্মসমর্পনের পর সোহেলের দাবি, সে বা তার বাবা যুবককে খুন করেনি৷

Advertisement

নদীর চর দখলকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে বুধবার ওদলাবাড়িতে ঘিস নদীর ধারে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হন মহম্মদ ইলিয়াস নামের এক যুবক৷ তাকে চাকু দিয়ে মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে ঘিস বস্তির বাসিন্দা যুবক মহম্মদ সোহেল সরকারের বিরুদ্ধে৷ ঘটনার পর থেকেই সপরিবারে পলাতক ছিল ওই যুবক৷ কিন্তু এদিন দুপুরে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ধরা দেয় সে৷

সোহেলের অভিযোগ, ঘিস নদীর চর থেকে বালি তোলার লাইসেন্স একমাত্র তার বাবা আফাজউদ্দিনের রয়েছে৷ কিন্তু ইলিয়াসের দল ওখান থেকে জোর় করে বালি তুলতে নেয়৷ তারা তার প্রতিবাদ করে৷ সোহেলের দাবি, ‘‘বুধবার দুপুরে ইলিয়াসরাই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আমাদের ডাকে৷ আমার বাবা একটি গাড়িতে যায়৷ আর আমি মোটর বাইকে যাই৷ কিন্তু ওখানে যেতেই বাবাকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়৷ তখন কিছুক্ষণের জন্য ইলিয়াস উধাও হয়ে যায়৷ আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করি৷ একটু এগোতেই ইলিয়াসরা বাবার গাড়িটি ঘিরে ধরে৷ তখন বাবা দরজা খুলতেই ইলিয়াসের গায়ে ধাক্কা লাগে৷ আর ইলিয়াস পড়ে যায়৷ আমরা বেরিয়ে আসি৷’’ সোহেলের কথায়, ‘‘এখন বুঝতে পারছি ইলিয়াসের শরীরে কোনও অস্ত্র লুকনো ছিল৷ গাড়ির দরজার ধাক্কায় সেটা ওর শরীরে ঢুকে যায়৷’’

Advertisement

সোহেল জানিয়েছে, ঘটনার পর সে বাড়িতে ফিরে যায়৷ কিন্তু সাড়ে ছয়টা নাগাদ তার বাড়ির লোকেরা জানতে পারে ইলিয়াস মারা গিয়েছে৷ শোনা যায়, তাদের বাড়ি আক্রমণ করতে মানুষ যাচ্ছে৷ তখন বাড়ির পিছন দিক দিয়ে পালায় তারা৷ সোহেল জানায়, ‘‘বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমি প্রথম গজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজে আসি৷ সেখানে নদীর জলে মোবাইল ফোনটা ছুড়ে ফেলি৷ আমার আরেকটা মোবাইল ফোন গোলমালের সময় হারিয়ে গিয়েছিল৷ তিস্তা ব্যারেজ থেকে চাউলহাটিতে চলে যাই৷ সেখানে এক বন্ধুর সঙ্গে সারা রাত একটা চায়ের দোকানে থাকি৷’’ বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় ওই বন্ধুর মোবাইল থেকেই ওদলাবাড়িতে এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করে৷ তার কথাতেই দুপুরে কোতোয়ালি থানায় আত্মসমর্পণ করে সে৷

কোতোয়ালি থানাতেই রাখা হয়েছে সোহেলকে৷ তবে তার বাবা কোথা তা তার জানা নেই বলে জানিয়েছে সোহেল৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন