ইচ্ছেমতো বাঁধে নদীরা ভয়ঙ্কর, দাবি রিপোর্টে

নদীর এক পাড়ে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, জলস্রোত ভেঙে দিচ্ছেন অন্য দিকের পাড়। এক পাড়ে বালি-পাথরের বস্তা ফেলে উঁচু করা হচ্ছে। অন্য পাড়ের চাষের জমি, বসতবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ০২:২৬
Share:

নদীর এক পাড়ে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, জলস্রোত ভেঙে দিচ্ছেন অন্য দিকের পাড়। এক পাড়ে বালি-পাথরের বস্তা ফেলে উঁচু করা হচ্ছে। অন্য পাড়ের চাষের জমি, বসতবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। তাই নদীর পাড়ে যথেচ্ছ বাঁধ দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ জারি করল সেচ দফতর।

Advertisement

ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যেখানে খুশি বোল্ডার ফেলাও যাবে না। সেচ দফতরের অনুমতি ছাড়া কেউই নদীতে কোনও কাজ করতে পারবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুমতি ছাড়া কোথাও কাজ শুরু হলে বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপও করা যেতে পারে। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন বন্যা রুখতে স্থায়ী পরিকল্পনা হোক। যখন যেমন মনে হবে সে ভাবে বাঁধ তৈরি বা পাথর ফেলার প্রবণতা বন্ধ করতেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি না হয়।’’

সপ্তাহখানেক জুড়ে উত্তরবঙ্গে যে লাগাতার বন্যা পরিস্থিতি চলেছে, তার কারণ হিসেবে সেচ দফতরের রিপোর্টে একদিকে ভূটান এবং সমতলে নাগাড়ে বৃষ্টিকে দায়ী করা হয়েছে, তেমনিই নদীতে ইচ্ছেমতো বাঁধ তৈরি বা পাড় বাঁধাইকেও দোষারোপ করা হয়েছে। সঙ্কোশ, মানসাই, সিসামারা, রায়ডাক, ডায়না নদীতে কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই বাঁধ তৈরি, পাড় বাঁধাইয়ের কারণে জল বাড়তেই নদী উপচে অন্য পাড়ের বসতি এলাকা প্লাবিত করেছে বলে সেচ দফতরের দাবি। অপরিকল্পিত কাজ না হলে বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হতো না বলেও মনে করছেন সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। পরিবেশপ্রেমীরাও বলছেন, যে ভাবে উত্তরের নদীগুলিতে যথেচ্ছ ভাবে পাড় দখল ও নির্মাণ হচ্ছে তাতে জল বাড়লে বন্যা পরিস্থিতি অনিবার্য। নদী খাত দখল হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত জল বয়ে যাওয়ার পথ না পেয়ে উপচে পড়ার প্রবণতা তৈরি হয়।

Advertisement

গত বছরই ডায়না নদীতে বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করেছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। যে ভাবে বাঁধের নকশা তৈরি হয়েছিল, তাতে নদীতে জল বাড়লেই অন্য পাড়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়। জানতে পেরেই সেচ দফতর থেকে আপত্তি জানানো হয়। পরে সেচ দফতরের পরামর্শ মেনে বাঁধের কাজ হয়। একই ভাবে শামুকতলা এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকে শিসামারা, ঘোলানি-সহ কয়েকটি নদী ও ঝোরায় মাটির বাঁধ তৈরি হয়। যার জেরে নদী-ঝোরার গতিপথ বদলে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন সেচমন্ত্রী। রবিবাবু বলেন, ‘‘আমাদের তরফে বেশ কয়েকটি বাঁধ তৈরির প্রস্তাব সেচ দফতরকে দিয়েছি। আমরাও কয়েকটি জায়গায় বাঁধ তৈরি করব। সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেই পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন