চারদিনের মাথায় নতুন করে শিলিগুড়ির সেবক রোডের গুদামে চিতাবাঘটিকে দেখা গিয়েছে বলে বন দফতরের কাছে খবর পৌঁছল রাতে। বন দফতর সূত্রের খবর, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ গুদামের নিরাপত্তারক্ষী ও কিছু স্থানীয় বাসিন্দা চিতাবাঘটিতে দেখেছেন বলে দাবি করেন। সাড়ে ৮টা নাগাদ চিতাবাঘটাকে একটিয়াশালে দেখা গিয়েছে বলে বন কর্মীরা খবর পান। সেখানে তল্লাশি চালানর সময়ই গুদামের দেখা গিয়েছে বলে খবর মেলে। ফলে সোমবার রাতে নতুন করে তল্লাশি শুরু হয়েছে। সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের সদস্যরাও সার্চ লাইট দিয়ে তল্লাশি শুরু করেছেন।
বন দফতরের বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনের বনাধিকারিক উমা রানি এন বলেন, ‘‘কোনও এলাকায় চিতাবাঘের খবর পেলেই বনকর্মীরা পৌঁছে যাচ্ছেন। সেবক রোডের গুদাম এলাকায় বুনোটিকে ফের দেখা গিয়েছে বলে খবর এসেছে।’’
ইতিমধ্যে চিতাবাঘের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে শিলিগুড়ি সেবক রোড লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। ৩মে সেবক রোডের গুদাম থেকে চিতাবাঘটা পালিয়ে গেলেও সেটির এখনও খোঁজ মেলেনি। এতে শালুগাড়া, ইস্টার্ন বাইপাস, ডাম্পিং গ্রাউন্ড, একটিয়াশাল-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। এর জেরে প্রায় প্রতিদিনই বিকাল থেকে রাতে অন্ধকারে ‘বাঘ-বাঘ’ বলে মাঝেমধ্যেই টেলিফোন আসছে বন দফতরে। কখনও বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনে, কখনও শালুগাড়া রেঞ্জ অফিসে, আবার কখনও সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডে চিতাবাঘ বেড়িয়েছে বলে টেলিফোন আসছে। এতে কার্যত দিশেহারা অবস্থা বনকর্মীদের। রোজই তাঁদের গাড়ি নিয়ে চিতাবাঘের খোঁজে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে।
বন দফতর সূত্রের খবর, রাতে একটিয়াশালে চিতাবাঘ দেখা গিয়েছে বলে বৈকুন্ঠপুর ডিভিশনে ফোন যায়। রাত ৯টা নাগাদ বৃষ্টির মধ্যে বনকর্মীরা গাড়ি নিয়ে একটিয়াশালের গিয়ে নজরদারি শুরু করেছেন। তারপরে খবর আসে সেবক রোডে ঝোপে ঘেরা গুদামে চিতাবাঘটাকে লাফিয়ে পড়তেও কয়েকজন দেখেছেন। সেই সঙ্গে এলাকার কিছু কুকুরও চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেওয়ায় আতঙ্ক আরও ছড়ায়।
বন দফতরের কয়েকজন অফিসার জানান, ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া এলাকায় বৈকুন্ঠপুরের বিরাট জঙ্গল রয়েছে। তেমনিই, শালুগাড়ার দিকে মহানন্দা অভয়ারণ্য রয়েছে। আড়াই মাইলের ঝোপ জঙ্গলে ঘেরা গুদাম থেকে চিতাবাঘ সম্ভবত ওই দু’টি জঙ্গলের কোনটিতে ঢুকে পড়েছে। সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে বড় কুকুর, ছাগল দেখেও চিতাবাঘ বলে ফোন এসেছিল।
এদিকে রাতে বৃষ্টি হওয়ায় তল্লাশি অভিযানে কিছুটা সমস্যা পড়েন বন কর্মীরা। সার্চ লাইট জ্বালিয়ে গুদামের বিভিন্ন অংশে জাল পেতে নজরদারি শুরু করা হয়। গত বৃহস্পতিবারও চিতাবাঘটাকে টিনের চালে দেখা গিয়েছিল।