নিজস্ব চিত্র
দশ মাসের শিশুকন্যার পেটে বসেছিল অ্যাসিড পোকা (নাইরোবি ফ্লাই)। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মাছিটিকে ধরে বোতলবন্দি করে হাসপাতালে ছুটলেন শিশুকন্যার বাবা-মা। অ্যাসিড পোকাকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হলেনও শিশুর মা-ও।
উত্তর দিনাজপুরে রায়গঞ্জের টেনহরি গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ দাসের বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। প্রদীপ জানান, বিছানায় শুয়ে ছিল শিশুকন্যা। আচমকাই চিৎকার। শুনে ঘরে ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, বাচ্চার পেটে বসে একটি মাছি বসে আছে। প্রদীপ দেখেই বোঝেন, সেটি অ্যাসিড পোকা। দ্রুত মেয়ের পেট থেকে মাছিটিকে সরাতে গিয়ে আক্রান্ত হন স্ত্রীও। এর পর মাছিটিকে ধরে একটি বোতলে ভরে আক্রান্ত শিশুকন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে ছোটেন প্রদীপ।
হাসপাতালে জরুরি বিভাগেই চিকিৎসা হয় প্রদীপের মেয়ে ও স্ত্রীর। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকও পোকাটিকে নাইরোবি ফ্লাই বলে শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় প্রদীপ ও তাঁর পরিবারকে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় দেখে হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, অ্যাসিড পোকা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শুধু সাবধানতা জরুরি। এই পোকার আক্রমণের শিকার হলে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক দিন ধরেই উত্তরবঙ্গের বহু মানুষ অ্যাসিড পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। যদিও পতঙ্গ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই নাইরোবি ফ্লাই কামড়ায় না, হুলও ফোটায় না। তবে গায়ের উপর বসলে ত্বকে জ্বালা ধরায়। ফ্যাকাসে দাগও হয়ে যায়। তবে এক-দু’সপ্তাহের মধ্যে আবার স্বাভাবিক হয়ে যায় ত্বক। পোকা ত্বকে বসার সময় কড়া ধাঁচের অম্ল নিঃসৃত হয়, যা ত্বককে পুড়িয়ে দেয়। এই অম্ল ধাঁচের পদার্থটিকে পেডারিন বলা হয়। এটি ত্বকের সংস্পর্শে এলে প্রবল জ্বালা হয়। তার ফলে ত্বক পুড়ে গিয়ে ক্ষত তৈরি হয়। ত্বকের এই সমস্যা এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে নিরাময় হলেও সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই দ্রুত চিকিৎসা দরকার বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।