রায়গঞ্জে দুই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়াল রায়গঞ্জ পুরসভার তৃণমূলের উপ-পুরপ্রধান তথা আইএনটিটিইউসির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অরিন্দম সরকারের। শুক্রবার জেলা আদিবাসী সমন্বয় কমিটির তরফে জেলাশাসকের কাছে অরিন্দমবাবুর নামে অভিযোগ করা হয়েছে। রায়গঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হোটেল মালিকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ হয়েছে। তবে তাঁর নাম দেওয়া হয়নি।
আদিবাসী সমন্বয় কমিটির সভাপতি রবিন কিস্কু ওই অভিযোগ করেছেন। কমিটির জেলা সম্পাদক তথা তৃণমূল প্রভাবিত এসসি এসটি ওবিসি সেলের আদিবাসী সেলের উত্তরবঙ্গের সভাপতি স্যামুয়েল মার্ডির অভিযোগ, ‘‘ধর্ষণকাণ্ঢে ধৃতরা সকলেই অরিন্দমবাবুর অনুগামী। অরিন্দমবাবুই এত দিন সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে ধৃতদের আশ্রয় দিয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, যে হোটেলে দুই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে, তার মালিকের সঙ্গে অরিন্দমবাবুর যোগাযোগ রয়েছে। স্যামুয়েলের দাবি, দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার না হলে ৩১ জুলাই থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।
অরিন্দমবাবুর পাল্টা দাবি, ধৃতদের তিনি চেনেনও না। তিনি বরং দাবি করেন, ‘‘আইএনটিটিইউসির সভাপতি ও উপপুরপ্রধানের পদ থেকে সরানোর জন্য দলের কিছু নেতা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ আসল দোষীদের গ্রেফতার করুক। এর থেকে বেশি কিছু বলব না।’’ বিজেপি অরিন্দমবাবুর দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। জেলাশাসকের বক্তব্য, সব খতিয়ে দেখে তদন্ত হচ্ছে। অরিন্দমবাবুর দাবি, ‘‘ঘটনার ২০ দিন পর আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ায় ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়েছে।’’
স্যামুয়েলবাবুর পাল্টা দাবি, সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েই তাঁরা অরিন্দমবাবু ও ওই হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন! পুলিশেও অভিযোগ জানানো হবে। কেন তাঁরা পুলিশকে জানাননি? কমিটির পক্ষে থেকে জানানো হয়, পুলিশের উপরে তাদের আস্থা নেই। তাই জেলা প্রশাসনকেই তারা সব জানিয়েছেন।
৯ জুলাই রায়গঞ্জ করণদিঘির বাসিন্দা দুই আদিবাসী নাবালিকাকে একদল দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা ও সমস্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে গত ১৪ জুলাই কয়েক হাজার আদিবাসী রায়গঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ড চত্বর-সহ শহরের নানা এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর চালান।