কাজ চেয়ে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বঞ্চিত হলেন শিলিগুড়ি মহকুমার আড়াই হাজারেরও বেশি পরিবার। মহকুমা পরিষদের দাবি, যাঁরা কাজ পাননি তাঁদের সকলকে আগামী আর্থিক বর্ষে কাজ দেওয়া হবে। কেন এতগুলি পরিবারকে কাজ দেওয়া যায়নি, তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার। যদিও বিরোধী তৃণমূলের দাবি, কোন গ্রাম পঞ্চায়েতে কেমন কাজ হচ্ছে, তার দিকে নজর না দিতেই কাজ চেয়েও বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে পরিবারগুলিকে।
রাজ্যের প্রকাশিত গত আর্থিক বছরে পরিসংখ্যান অনুযায়ী শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ একশো দিনের প্রকল্পে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। বছরে গড়ে ৪৬ দিন কাজ হয়েছে শিলিগুড়ির চারটি ব্লকে।
সরকারি পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে গত বছরে কাজ দাবি করেছিল ৩৭ হাজার ৬০২টি পরিবার। এর মধ্যে কাজ পেয়েছে ৩৪ হাজার ৯১৫টি পরিবার। কাজ দেওয়া হয়নি ২৬৮৭টি পরিবারকে। কেন দেওয়া হয়নি তার একটা প্রাথমিক ব্যাখ্যা দিয়েছে পরিষদ। সভাধিপতি তাপস সরকার বলেন, ‘‘অনেক সময় বর্ষার জন্য অথবা অন্য কোনও কারণে কাজ করা সম্ভব হয় না। সে কারণে সেই প্রকল্পে যাঁদের কাজ পাওয়ার কথা, তাঁরা হয়ত পান না। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা দেখা হবে। যদি তেমন হয়ে থাকে, তবে প্রকল্পের কাজ কেন হল না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপরেখা অনুযায়ী কাজ চেয়ে যাঁরা কাজ না পান, তাঁদের বেকারভাতা দেওয়া হয়। তবে বেকার ভাতা দিলে লিখিত ভাবে জানাতে হয়, কেন কাজ দেওয়া হয়নি। সে ক্ষেত্রে শাস্তির মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকে সংশ্লিষ্ট কর্মী-আধিকারিকের। কাজ দেওয়ার নিরিখে মহকুমার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে নকশালবাড়ি ব্লক। গত বছরে গড়ে ৫০ দিন কাজ হয়েছে ব্লকে। এই ব্লকে কাজ চেয়েছে ১৮২টি পরিবার। বিডিও কিংশুক মাইতি বলেন, ‘‘কারা কাজ পাননি, তার তথ্য জোগাড় হচ্ছে। তবে চলতি বছরে ওই সব পরিবারকে কাজ দেওয়া হবে।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে মুখ চিনে কাজ দেওয়া হয়। সে কারণে পঞ্চায়েত সদস্য তথা আধিকারিকদের পরিচিতরা বেশি করে কাজ পেয়ে থাকেন এমন উদাহরণও রয়েছে বলে অভিযোগ। মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা কাজল ঘোষের দাবি, ‘‘কোন গ্রাম পঞ্চায়েতে কী কাজ হচ্ছে, কোন পরিবার কাজ চেয়ে পায়নি সেগুলি নির্দিষ্ট সময় পরে তদারকি করতে হয়। পরিষদ তা করেনি বলেই এমন হয়েছে।’’