চার বছরের শিশু। গায়ে জ্বর। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বললেন, রোগী দেখবেন না। এমনই অবাক করা অভিযোগ উঠেছে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার অসুস্থ শিশুটিকে কোলে নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা হাসপাতালের এ দরজা থেকে ও দরজা ঘুরলেন ওই শিশুর অভিভাবকেরা। পরে পরে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে জরুরি বিভাগের চিকিৎক শিশুটিকে দেখেন। বিষয়টি নিয়ে কোন চিকিৎসকের নাম না করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন শিশুটির বাবা। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার পক্ষে, সেখানে চিকিৎসকদের একাংশের এই মনোভাব ক্ষুদ্ধ শিশুর পরিজনেরা।
ঘটনাটি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “হাসপাতালের কর্মী ও চিকিৎসকদের বড় একটি অংশ দিনরাত রোগীদের পরিষেবা দিচ্ছেন। সেখানে কোনও চিকিৎসক রোগী দেখতে অস্বীকার করতে পারেন না কোনও ভাবেই।’’ তিনি জানান, বিষয়টি সুপারকে তদন্ত করতে বলবেন, যাতে ভবিষতে যেন এধরনের ঘটনা না ঘটে।
হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন জানান, এ দিন শিশু বিশেষজ্ঞ ছুটিতে ছিলেন। তবে কোনও চিকিৎসকই রোগী দেখবেন না, এটা বলতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘‘কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটল তা অবশ্যই দেখছি।’’
তপসিখাতার বাসিন্দা পুলক রায় জানান, গত তিন দিন ধরে তাঁর চার বছরের ছেলের জ্বর ও বমি হচ্ছিল। এ দিন জ্বর বাড়ায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে সকাল ন’টায় জেলা হাসপতালে আসেন। টিকিট কাউন্টারে জানতে পারেন, শিশু বিশেষজ্ঞ আজ বসবেন না। সেই মতো অন্য চিকিৎসককে দেখানোর জন্য টিকিট কাটেন।
প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিটি তিনি ও আরও একটি শিশুর পরিবার লাইনে দাড়িয়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কাছে যান। তারা রোগীকে না দেখেই বলেন, এটা শিশু বিশেষজ্ঞের কাজ। পরে তাঁরা হাসপাতালের হেল্পলাইন নম্বর ফোন করলে এক কর্মী এসে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক রাজা সাহা শিশু দু’টিকে দেখেন ও ওষুধ দেন। পুলকবাবু বলেন, “আমরা গ্রাম থেকে এসেছিলাম। জ্বর ও বমির ওষুধ নিতে চিকিৎসক রোগীকে দেখবেন না বলে দেবেন, এটা ভাবতেই পারছি না। বিষয়টি লিখিত ভাবে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বহির্বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, রোগীর টিকিটে আয়ুর্বেদ লেখা ছিল। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।