দার্জিলিং জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি ১৩৩ জনের নতুন কমিটি ঘোষণা করেছিলেন সপ্তাহ পার হয়নি। এর মধ্যেই কমিটিতে থাকা নেতা-সদস্যদের একাংশ যুব সভাপতি বিকাশ সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে সরব হলেন।
সোমবার তাঁরা দল বেঁধে যুব সভাপতির পদত্যাগ দাবি করে ওই কমিটি ভেঙে দিতে সরব হন। বিক্ষোভ দেখিয়ে নিজেরাও নতুন কমিটি থেকে পদত্যাগের কথা জানান। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রীর কাছে লিখিত ভাবে তা জানানোর কথা বলেন। দলের দার্জিলিং জেলার পর্যবেক্ষক তথা ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সির কাছেও ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠাবেন
বলে জানান।
বিক্ষুব্ধদের মধ্যে রয়েছেন কাউন্সিলর দুর্গা সিংহ, যুব নেতা ধীমান বসু, কুন্তল রায়, মনোজ বর্মাদের মতো অনেকেই। দুর্গাদেবী, ধীমানবাবু, মনোজবাবুদের নতুন কমিটির সহ সভাপতি করা হয়েছিল। কুন্তলবাবুকে করা হয় টাউন ব্লকের যুগ্ম-আহ্বায়ক। তাঁদের অভিযোগ, বিকাশবাবুর মদতেই জেলায় বিভিন্ন অনৈতিক কাজকর্ম এবং সিন্ডিকেট রাজ চলছে। জমির কারবার থেকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে তিনি ও তাঁর লোকজন যুক্ত। বিভিন্ন সংগঠন থেকে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের যোগদান করিয়ে জেলা কমিটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়েছেন। দাবি, যাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে। অথচ যে কর্মীরা তৃণমূলের শুরু থেকে রয়েছেন তাঁদের মাথার উপরে ওই সমস্ত ব্যক্তিদের বসানো হয়েছে। প্রতিবাদে যুব সভাপতিকে ‘অপদার্থ’ আখ্যা দিয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
ঘটনাচক্রে এ দিন উত্তরবঙ্গ সফরে দার্জিলিঙে রয়েছেন অরূপবাবু। তিনি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি ফিরে সবার সঙ্গে কথা বলব।’’ বিকাশবাবু বলেন, ‘‘যাঁদের দুর্নীতিগ্রস্ত বলছেন, তার প্রমাণ দিন।’’ তাঁর কথায়, তৃণমূলে যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও এক সময় অন্য দলে ছিলেন। তিনিও অন্য দল থেকে এসেছেন। কাউকে অসম্মান করেননি। সবাইকে নিয়েই কমিটি করেছেন। কে মাথার উপরে বসবে তা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ঠিক করছেন।
বিকাশবাবুর বিরুদ্ধে সংগঠনের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ শুরু থেকেই। পুরসভায় আন্দোলন করতে গিয়েও যুব সংগঠনের অপর গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের গোলমাল বেঁধেছিল। ক্ষোভ সামাল দিতে ২১ জন সহ সভাপতি, ২৬ জন সাধারণ সম্পাদক, ১৫ জন সম্পাদক, ৩৩ জন সহকারী সম্পাদক রেখে বড় জেলা কমিটি গঠন করেন। তার মধ্যে এ দিন ৬ জন সহ সভাপতি, ৮ জন সাধারণ সম্পাদক, ৬ জন সম্পাদক, সহ সম্পাদক ৪ জন, কার্যকরী কমিটির ৬ জন সদস্য-সহ অন্তত ৪০ জন পদত্যাগ করেন বলে দাবি। তবে তাঁরা দলের একনিষ্ট কর্মী হিসাবেই থাকবেন।