এডস সচেতনতায় বাপ্পাদার জাদু

বাপ্পাদা ‘জাদু’ দেখাতে শুরু করলেই তাঁর থলে থেকে কখনও কখনও বেরিয়ে আসে একের পর এক বোর্ড। কোনওটিতে লেখা থাকে, এডস রুখতে ব্যবহার করুন জন্মনিরোধক।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

একসময় ছিলেন বুলাদি। এখন ‘বাপ্পাদার জাদু’।

Advertisement

বাপ্পাদা ‘জাদু’ দেখাতে শুরু করলেই তাঁর থলে থেকে কখনও কখনও বেরিয়ে আসে একের পর এক বোর্ড। কোনওটিতে লেখা থাকে, এডস রুখতে ব্যবহার করুন জন্মনিরোধক। কোনওটিতে লেখা ‘এইচআইভি আক্রান্তকে বয়কট করবেন না’। কখনও তাঁর হাতে থাকা সাদা বোর্ডে লেখা উঠছে, ‘গর্ভবতী অবস্থায় রক্ত পরীক্ষা করাতে যান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। যেখানে এইচআইভি পরীক্ষা হয়।’ এই প্রচারে সচেতনতা অনেকটাই বাড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও। কোচবিহার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ইন্দ্রজালের মাধ্যমে প্রচারে একসঙ্গে অনেক মানুষকে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে তা কাজে লাগছে।”

বাপ্পাদার পুরো নাম বাপ্পা সাধু। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণার নৈহাটিতে। তিনি প্রায় কুড়ি বছর ধরে জাদু দেখান। স্বাস্থ্য দফতরের হয়ে প্রায় তিন হাজারের বেশি শো করেছেন। এরই পাশপাশি টিবি, ম্যালেরিয়ার মতো বিষয় নিয়েও সচেতনতা প্রচার চালান তিনি। বর্তমানে তিনি রয়েছেন কোচবিহারে। তাঁর কথায়, “এই কাজ শুধু ইন্দ্রজাল দেখানো নয়। তার মাধ্যমে একটা বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। সে চেষ্টাই করছি।”

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের তরফেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১২০০ জনেরও বেশি। ২০১৬ সালে তা ছিল ১২৭৬ জন। ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয় ১৪২৮ জন। এভাবেই কোনও বছর বাড়ছে, কোনও বছর কিছুটা কমে যাচ্ছে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা। দফতরের সমীক্ষা বলছে, যে সব এলাকা থেকে কাজের খোঁজে ভিন্‌রাজ্যে যাচ্ছেন বাসিন্দারা, সেখানে এডস রোগীর সংখ্যা বেশি।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, মুম্বই থেকে কাজ করে তুফানগঞ্জের বাড়িতে ফেরার পর এক যুবকের দেহে এইচআইভি জীবাণুর দেখা মেলে। পরীক্ষা করে জানা যায়, তাঁর এডস হয়েছে। বাড়ির লোকজন তাঁকে বের করে দেয়। তারও আগে কেরালা থেকে ফিরে আসা এক যুবকের এডস ধরা পড়লে গ্রামের মানুষ বয়কট করেন তাঁকে। কোচবিহারে এমন ঘটনার অনেক উদাহরণই সামনে এসেছে। তাই কেবল রোগ ঠেকানোই নয়, রোগীদের সঙ্গেও যেন কেউ খারাপ ব্যবহার না করেন সেই বার্তা দেওয়া হচ্ছে ইন্দ্রজালের মাধ্যমে। সেই সঙ্গে কিছু এলাকায় নাটকও করা হচ্ছে।

কোচবিহার ২ ব্লকের পুন্ডিবাড়ি-সহ ২৮টি জায়গায় ও তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙার কিছু জায়গায় ওই বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। ওই জায়গার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ অন্য রাজ্যে যান। কোচবিহারের সিএমওএইচ-২ শ্যামল সোরেন বলেন, “গর্ভবতী মহিলাদের এইচআইভি পরীক্ষা করানো হচ্ছে। ভিন্‌রাজ্যে থেকে যারা ফিরছেন তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন