দ্বারস্থ: জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করলেন নুর ও ডালু। নিজস্ব চিত্র
নিপা ভাইরাসের গুজবে মালদহের আম বিক্রিতে প্রভাব পড়েছে বলে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম নুর। মঙ্গলবার জেলার আর এক সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)-সহ কয়েক জন বিধায়ককে নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন মালদহ জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী।
মৌসম এ দিন বলেন, ‘‘গুজব রটিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মালদহের আম খেলে নাকি নিপা ভাইরাস হতে পারে। এর জেরে অসম, ত্রিপুরা, বিহার, ঝাড়খণ্ডে মালদহের আম নিচ্ছে না বলে জেলার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন। আমাদের রাজ্যের অন্য জেলাতেও আম বিক্রি হচ্ছে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মালদহের আম যে সম্পূর্ণ নিরাপদ সে ব্যাপারে সরকারি সচেতনতা প্রচারের জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে জেলাশাসককে অনুরোধ করেছি। প্রতিবেশী রাজ্যগুলিকেও এই বার্তা দেওয়ার জন্য বলেছি।’’
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লাকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৌসম। আবু হাসেম বলেন, ‘‘গুজবের জেরে মালদহে আম ৫০ শতাংশ বিক্রি কমে গিয়েছে।’’ জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, সচেতন করা চলছে।
এ দিকে, পাইকারি বাজার বলে পরিচিত মালদহ জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজারে এখন কেজি প্রতি হিমসাগরের দাম এখন ১০ টাকা, ল্যাংড়া ১৫ টাকা, লক্ষ্মণভোগ ৭ টাকা। গুটি বা দেশি প্রজাতির আমের পাঁচ থেকে ছ’টাকা কেজি। এত কম দামেও আম কেনায় উৎসাহ ভিন জেলা বা ভিন রাজ্যের ব্যবসায়ীদের। ইংরেজবাজারের জহরাতলার আমচাষি কৃষ্ণ সাহনি বলেন, ‘‘প্রতিবছর জামাইষষ্ঠীর আগে আমার ৩০ বিঘার জমির আম নিতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এ বার একজনও খোঁজ নিতে আসেননি। বাজারে নিয়ে গিয়েও বিক্রি হচ্ছে না।’’ আম ব্যবসায়ী অশোক দাস বললেন, ‘‘এ সময়ে অসম, ত্রিপুরা, বিহারে প্রতিদিন আমার ১০ ট্রাক আম বিক্রির জন্য যায়। সেখানে দু’ট্রাকও বিক্রি হচ্ছে না।’’ মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘‘সরকারের উচিত বিষয়টি নিয়ে সচেতন করা।’’ মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘আতঙ্ক না কাটলে আমের সঙ্গে জড়িত মালদহের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে।’’