অনলাইন চালু রয়েছে। নেই বুকিং। পাহাড়ের আন্দোলনে প্রায় দু’মাস ধরে কার্যত তালাবন্দি বন উন্নয়ন নিগমের বাংলোগুলি। পুড়ে ছাই হয়েছে নিগমের অধীন থাকা একাধিক সম্পত্তি। সব মিলিয়ে চলতি বছরে বড়সড় লোকসানের আশঙ্কায় দিন গুনছে রাজ্য বন উন্নয়ন নিগম।
ইতিমধ্যে নিগমের কর্তারা একাধিক বৈঠক করেছেন। তাঁরাই জানাচ্ছেন, পাহাড়ের পরিস্থিতি না বদলানো পর্যন্ত অবস্থা পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “অনলাইন বুকিং চালু থাকলেও দীর্ঘদিন কোনও বুকিং নেই। কেউ পাহাড়ের দিকে যাচ্ছেন না। এই অবস্থায় লোকসানে পড়তে হবে।”
প্রতি বছরই নিগম বনবাংলো-সহ তাঁদের নানা পরিষেবা এবং কাঠ বিক্রি থেকে বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা আয় করে। এ বারে সেই আয় কয়েক কোটি টাকা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগুন লাগিয়ে নিগমের একাধিক সম্পত্তি পুড়িয়ে দেওয়াতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। নিগমের অধীনে থাকা গরুবাথানে একটি রেঞ্জ অফিস, জলঢাকায় একটি বিট অফিস, বাতাসিতে একটি স্টাফ কোয়ার্টার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দু’টি বাজেয়াপ্ত করা গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নিগমের এক কর্তা বলেন, “যা অবস্থা তাতে বহু কোটি টাকা লোকসান হবে। পাহাড়ের আন্দোলনে রাশ টেনে আনাই একমাত্র পথ।”
নিগমের বাংলোগুলির মধ্যে গরুবাথান, কালিম্পং, লাভা, লেপচাজগত, লোলেগাও, মংপং, প্যারেন, সুনতালেখোলা, জলঢাকা, সামসিং পাহাড়ের মধ্যেই। এগুলি-সহ ডুয়ার্সের সব বাংলোগুলিতেই প্রায় সারা বছর ভিড় থাকত। পাহাড়ে বন্ধ শুরু হতেই বাংলোগুলির বুকিং বাতিল হতে শুরু করে। যে জুন মাসে পর্যটকদের ঢল নামে সেখানে ওই মাসে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছে কর্মীদের। হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “শুধু নিগমের বাংলো নয়, দার্জিলিঙের কোথাওই কোনও পর্যটক নেই। পর্যটক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককেই হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে।”
এই অবস্থায় ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীরা পুজোর মরসুমের দিকেই তাকিয়ে আছেন। তাঁদের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন ঢল নামবে।