সারা দিন ‘নো ক্যাশ’

সারা দিন আকুল অপেক্ষার পরে বিকেলে বেশ কিছু এটিএম থেকে টাকা মিলতে শুরু করে। সন্ধে গড়াতেই সে সব এটিএম কিয়স্কের শাটার নেমে যায়। ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫০
Share:

সারা দিন আকুল অপেক্ষার পরে বিকেলে বেশ কিছু এটিএম থেকে টাকা মিলতে শুরু করে। সন্ধে গড়াতেই সে সব এটিএম কিয়স্কের শাটার নেমে যায়। ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড। কোথাও বা অর্ধেক নামানো শাটারের সামনে বসে নিরাপত্তা কর্মী জানিয়েছেন, ‘‘আজকের মতো টাকা শেষ। কাল ব্যাঙ্ক বন্ধ। পরশু আসুন।’’ শুনে মুখ শুকনো করে ফিরে এসেছেন বহু মানুষ।

Advertisement

চুম্বকে এটাই ছিল রবিবারের এটিএম দুর্ভোগের চিত্র।

রবিবার সকাল থেকেই ব্যাঙ্কের সামনে বিশাল লাইন দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ি থেকে মালদহে। কোচবিহার জেলায় মোট এটিএমের সংখ্যা ১৬৮টি। তার মধ্যে এ দিন খোল ছিল সাকুল্যে ২০টি। তাও খুব অল্প সময়ের জন্যই। পাতলাখাওয়ার বাসিন্দা আসাদুল রহমান বলেন, “এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। টাকা পাইনি। এটিএম মেশিনের কাছে পৌঁছনোর আগেই টাকা ফুরিয়ে যায়।” মালদহ জেলায় রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক মিলিয়ে এটিএমের সংখ্যা ২০৫টি। অথচ রবিবার দু-একটি বাদে কোনও এটিএম খোলেনি। ফালাকাটা এবং ধূপগুড়িতে আবার ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়ানো নিয়েই কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। রবিবারে সারা ফালাকাটায় মাত্র একটি এটিএম খোলা। তার সামনে কয়েক গ্রাহকের লাইন। টাকা তোলার আগেই এটিএম লাইনের মধ্যে শুরু হয়ে গেল কালোবাজারির অভিযোগ। মোটা টাকা দিলেই লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ি জেলাতে ১৮১টি এটিএম রয়েছে। সবচেয়ে বেশি এটিএম রয়েছে এসবিআইয়ের। যদিও, এসবিআইয়ের কোনও এটিএমই এ দিন খোলেনি বলে অভিযোগ। আলিপুরদুয়ার জেলার ৮৭টি এটিএমের মধ্যে এ দিন দশটিকেও খোলা দেখা যায়নি বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।

Advertisement

সকালের দিকে ব্যাঙ্ক লাগোয়া ১০ থেকে ১৫টি এটিএম খোলা থাকলেও দুপুর গড়াতেই তারমধ্যে বেশিরভাগ এটিএমে টাকা শেষ হয়ে যায়। সেখান থেকে তারপর খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে গ্রাহকদের। রায়গঞ্জের অশোকপল্লি এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মানসী সরকার বলেন, ‘‘তিন দিন লাইন দিয়ে শেষে দু’হাজার টাকা পেলাম।’’

শিলিগুড়িতে রবিবার সকাল সাড়ে আটটা, ন’টা থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সামনে লাইন পড়ে যায়। স্টেট ব্যাঙ্কের শাখাগুলিতেই ভিড় ছিল সব চেয়ে বেশি। সকালে এটিএম কাউন্টারগুলি বন্ধ ছিল। তা সত্ত্বেও হিলকার্ট রোড়ে, এসএফরোডে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমের সামনে ভিড় হয়। শালুগাড়ার বাসিন্দা মুরলি ধর নায়েক, শান্তিনগরের বাসিন্দা বিমল বিশ্বাস, বিনা রাইরা সকাল থেকে ব্যাঙ্কের সামনে লাইন দেন। কেউ টাকা জমা করবেন, কেউ তুলবেন। লাইনে দাঁড়ানো ভেনাস মোড়ের বাসিন্দা মহন্মদ সেলিম, কলকাতার বাসিন্দা নিঙ্গকর পাল, শিলিগুড়ির বাসিন্দা কিশোর কররা জানান, এটিএম খুলবে এই আশাতেই তাঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বেলা ১২ টার পর অবশ্য এটিএম খোলে। পাশে অপর আরেকটি ব্যাঙ্কের এটিএম থাকলেও সেটি খোলেনি। শিলিগুড়ি মহকুমায় অন্তত তিনশো এটিএম রয়েছে। যার বেশিরভাগের সামনেই এ দিন ঝুলেছিল ‘নো ক্যাশ’ বোর্ড।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন