নালিশ নেই, ব্যতিক্রমী শীলবাড়িহাট

ঢোকার মুখে সাজানো গাছের সারি। চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। নেই কোনও কোলাহলও। ডাক্তারের ডাকের অপেক্ষায় লাইন দিয়ে বসে রয়েছেন রোগীরা। কোনও বেসরকারি নার্সিংহোম নয় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই চিত্র এটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২৯
Share:

দৃষ্টান্ত: প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে খুশি বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

ঢোকার মুখে সাজানো গাছের সারি। চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। নেই কোনও কোলাহলও। ডাক্তারের ডাকের অপেক্ষায় লাইন দিয়ে বসে রয়েছেন রোগীরা। কোনও বেসরকারি নার্সিংহোম নয় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই চিত্র এটি। জায়গাটা আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকা শীলবাড়িহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

Advertisement

প্রায় প্রতিদিনই সরকারি চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা অভিযোগ শোনা যায়। সেখানে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিষেবা ব্যতিক্রম বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদেরই একজন গোবিন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অনেক সময়েই প্রয়োজনে ব্লক হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু সেখানে এখানকার মতো ব্যবহার, পরিষেবা কোনটাই পাই না।’’ ১৯৫০ সালে তৈরি হয় শীলবাড়িহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ২০১১ সাল থেকেই এই ভোল বদল বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।

এই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ঋত্বিক দাসের কথায়, চিকিৎসা করাতে এসে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পেলে রোগীরা শান্তি পান। চিকিৎসকদেরও হাসপাতালে এসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখতে কারও ভাল লাগে না। ঋত্বিক দাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর পরিবেশ হলে কাজ করার উৎসাহও বেশি পাওয়া যায়।’’ সে কারণেই চিকিৎসা করাতে এসে রোগীরা যাতে বাড়ির মতো পরিবেশ পায় সেই চেষ্টাই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তরফে করা হয় বলে জানান তিনি। শীলবাড়িহাট স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বহির্বিভাগে রয়েছে সিলিং ফ্যান, দেওয়ালও রঙ করা। রয়েছে পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থাও। রোগীদের বসার ব্যবস্থার পাশাপাশি মনোরঞ্জনের জন্য রাখা হয়েছে টিভিও। স্বাস্থ্য সচেতনতা সংক্রান্ত নানা পোস্টারও লাগানো রয়েছে হাসপাতালে। ঋত্বিক দাস জানান, স্বাস্থ্য কর্মীরা রোগীদের সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেন, ওষুধও ধৈর্য্য ধরে বুঝিয়ে দেন। ছেলের জ্বর হওয়ায় হাসপাতালে দেখাতে এসেছিলেন শম্পা রায়। তিনি বলেন, ‘‘এখানে পরিবেশ খুব শান্ত। আমাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন।’’

Advertisement

কাজের ফাঁকে হাসপাতাল চত্বরে নানা গাছ লাগান হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান সুশান্ত নাগ, ফার্মাসিস্ট অনিমেশ রায়রা। হরিতকি, নিম, বাসক, কালোমেঘ, তুলসী-সহ নানা ধরনের গাছ লাগানো হয়। বাজারে কোনও ভালো চারাগাছ দেখলে তা কিনে আনা হয় বলে জানান সুশান্তবাবুরা। পরিচ্ছন্নতার জন্য ২০১৬ সালে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কায়াকল্প পুরস্কারও মিলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন