মন্ত্রী নেই, তাই কি থমকে কাজ

জেলার মন্ত্রী নেই। সরকার ও দলের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করবেন কে? প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলেই।কিন্তু জেলা থেকে কোনও মন্ত্রী না থাকায়, মালদহে উন্নয়েনর কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই। অনেকে বলছেন, মন্ত্রী সরকারি পদাধিকারী।

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতা এবং আশপাশের জেলাগুলি থেকে শাসক দলের একাধিক মন্ত্রী রয়েছেন মন্ত্রিসভাতে। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে গেল মালদহ থেকে কোনও মন্ত্রী নেই। কারণ, শাসক দলের টিকিটে কোনও প্রার্থী গত বিধানসভা নির্বাচনে মালদহে জিততে পারেননি। পরে অন্য দল থেকে চার বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁদের মন্ত্রী করতে পারছে না শাসক দল। কারণ, তা হলে সেই বিধায়করা ‘অ্যান্টি ডিফেকশনে’ পড়বেন। মন্ত্রী করলেও ছ’মাসের মধ্যে পদত্যাগ করে তৃণমূলের টিকিটে জিততে হবে। তখন হারলে মুখ পুড়বে দলীয় নেতৃত্বের।

Advertisement

কিন্তু জেলা থেকে কোনও মন্ত্রী না থাকায়, মালদহে উন্নয়েনর কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই। অনেকে বলছেন, মন্ত্রী সরকারি পদাধিকারী। তাঁর কথা প্রশানের কর্তারা অমান্য করতে পারেন না। কিন্তু সাধারণ নেতাদের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা অত গুরুত্ব দেন না। দলত্যাগ করে তৃণমূলে এসেছেন এমন এক বিধায়ক বলেন, ‘‘মন্ত্রী থাকলে বহু কাজ প্রশাসনকে দিয়ে করানো যায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভব হচ্ছে না। দলের নেতাদের কথা অনেক সময় গুরুত্ব পায় না প্রশাসনের কাছে।’’

২০১১ সালে সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। দু’জনেই ২০১৬ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়ে পরাজিত হন। তার পর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে যান রতুয়ার কংগ্রেসের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন। সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেন গাজলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস এবং সিপিএমের সমর্থনে ইংলিশবাজার থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে জিতে বিধায়ক হন নীহার ঘোষ। এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘নীহারকে ইংলিশবাজারের পুরপ্রধান করা হলেও অন্য বিধায়কদের কোনও পদ দেওয়া হয়নি। এতেই ক্ষোভ বাড়ছে।’’

Advertisement

এই অবস্থায় দল এবং সরকারের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে মালদহে দু’টি কেন্দ্রেই দলের প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় শুভেন্দুবাবু পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। তার পরে মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ও গোলাম রব্বানিকে মালদহের পর্যবেক্ষক করা হয়। কিন্তু এতেও জেলার সংগঠনের কোনও উন্নতি হয়নি। থমকে উন্নয়ন।

জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘ইংলিশবাজার পুরসভা এলাকায় পুর পরিষেবা নিয়ে দলের কাউন্সিলারদের মধ্যেই ক্ষোভ দেখা দেয়। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলের কাউন্সিলাররাই। কিন্তু তার মিমাংসার চেষ্টা করা হয় কলকাতায়। দলের এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-র দিকে অনেক নেতাই পা বাড়িয়ে রেখেছেন। শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন