কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত ধূপগুড়ির সেনা জওয়ান শুভেন্দু রায়ের মৃত্যুর এক বছর পূর্তি হল শুক্রবার। তাঁর বাড়ি লাগোয়া জমিতে তৈরী স্মৃতি মন্দির জাতীয় পতাকা আর ফুল দিয়ে সাজিয়ে স্মরণ করা হল প্রয়াত জওয়ানকে। শুভেন্দুবাবুর বৃদ্ধা মা, দুই শিশু সন্তান-সহ তাঁর স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। হারানোর যন্ত্রণাতো রয়েইছে, পাশাপাশি অনিশ্চয়তার কাঁটাতেও এখন রক্তাক্ত পরিবারটিকে।
এক বছর আগের সেই দিনটিতে শুভেন্দুবাবুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী আমলারা। তাঁদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিতে খানিকটা বল পেয়েছিলেন সাড়ে এগারো বছরের তানিশা ও সাড়ে পাঁচ বছরের বৃষ্টির মা অঞ্জনা রায়। কিন্তু অঞ্জনাদেবীর অভিযোগ, এক বছর পার হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা অনুদান ছাড়া আর কিছুই মেলেনি। তিনি বলেন, ‘‘গত এক বছরের বিভিন্ন দফতরে চাকরির জন্য বেশ কয়েকবার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও চাকরিই পেলাম না। দুই মেয়েকে নিয়ে এখন বাবার বাড়িতে থাকি। আমার কোনও উপার্জন নেই। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করছি আমার শিক্ষাগত যোগ্যতায় কোনও একটা চাকরি ব্যবস্থা করে দিন।’’
শুভেন্দুবাবুর দাদা অরবিন্দ রায়ও বলেন, “শুনেছি হরিয়ানার শহিদ সেনা সেখানকার রাজ্য সরকারের থেকে সবরকম সাহায্য পেয়েছেন। কিন্তু আমার ভাই টাকা ছাড়া কিছুই পেল না।”
গত বছর বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থল কাশ্মীরে যাওয়ার পথে উধমপুরে সশস্ত্র জঙ্গিদের সামনে পরে গিয়েছিলেন ধূপগুড়ির যুবক শুভেন্দু। বেশ কিছুক্ষণ লড়াই করার পর চালকের পিছনে বসে থাকা শুভেন্দুবাবু গুলিবিদ্ধ হন। গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন হরিয়ানার রকি সিং নামে এক সেনাও। শুভেন্দুবাবুর দেহ দিল্লি থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামানোর পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। মরদেহের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ রায় তাঁর বাড়িতে এসে পরিবারকে সমবেদনা জানান। ১৭ বছর ধরে সেনা বাহিনীতে চাকরি করেছেন শুভেন্দু। আর তিন বছর পরেই অবসর নেওয়ার কথা ছিল তাঁর।