রুট সম্প্রসারণের দশ মাস পেরোতে চললেও কোচবিহার টাউন স্টেশনে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের স্টপেজ চালু না হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধের কথা মাথায় রেখে দ্রুত স্টপেজ চালুর ব্যাপারে সরব হয়েছে কোচবিহারে বিভিন্ন সংগঠনের কর্তারাও। কোচবিহার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের তরফে ওই ইস্যুতে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই সংগঠনের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের রুট সম্প্রসারণ হয়েছে গত জানুয়ারিতে। অথচ এত দিনেও কোচবিহার শহরের স্টেশনে ট্রেনটির স্টপেজ চালু হয়নি। ফলে কোচবিহার শহরের বাসিন্দাদের ওই পরিষেবা কোন কাজেই লাগছে না। উপনির্বাচনের পর এ নিয়ে আন্দোলন করা হবে।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের আমলে চালু হওয়া স্টেশনটিতে যাত্রীদের সুবিধের জন্য ওই ট্রেনের স্টপেজ চালু করা দরকার।” ওই ইস্যুতে জন মত জোরালো করতে জেলা জুড়ে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা।
রেল সূত্রের খবর, নিউ কোচবিহার-শিয়ালদহ উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসটি গত জানুয়ারি থেকে স্পেশাল ট্রেন হিসাবে কোচবিহার-দেওয়ানহাট-ভেটাগুড়ি-দিনহাটা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়। উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের ১৯টি কামরা নিয়েই ট্রেনটি চলছে। কোচবিহার স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ১৪টি কামরা দাঁড়াতে পারে। তার উপর স্টেশনের দুই দিকে লেভেল ক্রসিং ঢাকা পড়ে যায়। পরিকাঠামোগত ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় স্টপেজ চালু করা যায়নি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম সঞ্জীব কিশোরও বলেন, “পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে।” যাত্রীদের অনেকেই অবশ্য ওই যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, কামরা সংখ্যা কমিয়ে সহজেই নিউ কোচবিহার-দিনহাটা রুটে ট্রেনটি চালান হলে সমস্যা হবে না। লেভেল ক্রসিং বন্ধ রেখে ট্রেনটি ওই রুটে যাতায়াত করছে। এক মিনিটের স্টপেজ হলেও যাত্রীরা উপকৃত হবেন।
গোটা ঘটনায় কোচবিহার লোকসভা উপনির্বাচনের মুখে কোচবিহারে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলির চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “পরিকাঠামো উন্নয়নে ওভারব্রিজ করা দরকার। রাজ্য সরকার ওই ব্যাপারে উদ্যোগী না হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ওভারব্রিজ তৈরি কিংবা প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বাড়ানো সবটাই রেল কর্তৃপক্ষকে করতে হবে। কারণ জায়গাটা রেলের।” কোচবিহারের বাম প্রার্থী নৃপেন রায় বলেন, “দায়িত্ব নিয়ে চাপানউতোর চলছে। জনস্বার্থের কথা কেউ ভাবছেন না।” কোচবিহারের যুব কংগ্রেস সভাপতি সম্রাট মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রে কংগ্রেসের সরকার থাকলে এমন সমস্যাই হত না।”