Eviction

মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার আগে উচ্ছেদের নোটিস, বিতর্ক

তৃণমূলের পুরপ্রধান অখিল বর্মণ ও উপপুরপ্রধান জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘বুনিয়াদপুর যখন পঞ্চায়েত ছিল তখনই গৌতম মণ্ডল ও ভবেশ ঢালির পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

বুনিয়াদপুর শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০১:৫৫
Share:

উচ্ছেদ: বার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। বুনিয়াদপুরে ফুটবল মাঠ সংলগ্ন এলাকায় শনিবার। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত জনসভার মাঠের কাছ থেকে চারটি ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিসে বিতর্ক তৈরি হল দক্ষিণ দিনাজপুরে। এত দিন তাদের সেখান থেকে সরিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে সভার আগে হঠাৎ বৃহস্পতিবার বুনিয়াদপুর পুরসভার এমন নোটিসে প্রশ্ন উঠেছে। সভাস্থলে ‘অবাঞ্ছিত দোকান-ঘর’ যাতে ব্যাঘাতের কারণ না হয়, সে কারণেই এমন উদ্যোগ কিনা সে নিয়েও বিতর্ক বেধেছে। জাতীয় সড়কের ধার থেকে নিজেদের হাতে ঘর ভাঙতে গিয়ে শনিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। তবে পুরসভার দাবি, পঞ্চায়েত থাকাকালীন তাদের মধ্যে দু’টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সেখানে যাননি।

Advertisement

তৃণমূলের পুরপ্রধান অখিল বর্মণ ও উপপুরপ্রধান জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘বুনিয়াদপুর যখন পঞ্চায়েত ছিল তখনই গৌতম মণ্ডল ও ভবেশ ঢালির পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন তাই নোটিস দেওয়া হয়েছে এমনটা নয়। আর বাকিদের ব্যবস্থাও আমরা করব।’’ যদিও চারটি পরিবারের সকলেই ঘর পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। নিজেদের জমি না থাকায় আবাস যোজনায় আবেদনও করতে পারেননি তাঁরা।

ঘর ও দোকান ভাঙতে ভাঙতে এ দিন ভবেশের প্রশ্ন, ‘‘এই ঝড়-জলের দিনে কোথায় মাথা গুঁজব, আর দোকান না করে খাবই বা কি?’’ মার্চের প্রথম সপ্তাহেই বুনিয়াদপুরে বুথ ভিত্তিক কর্মিসভা করতে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সভার জন্য ফুটবল মাঠকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেই মাঠের সামনে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরেই ছোট ছোট গুমটি ও চায়ের দোকান করে ভবেশের মতোই পেট চালান অনিল মণ্ডল, গণেশ সরকার ও গৌতম। দোকানের এক পাশেই থাকেন পরিবার নিয়ে। একমাত্র অবলম্বন ভেঙে দেওয়ায় কী ভাবে দিন চলবে, সেই চিন্তাতেই এখন ঘুম ছুটেছে তাঁদের।

Advertisement

অনিল বলেন, ‘‘আমরা কোনও ঘর পাইনি। তবে নোটিস দেওয়ার পরে পুরসভা থেকে জানিয়েছে আমাদের চার লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। সেই টাকায় জায়গা কিনতে বলেছে। জায়গা কিনলে তার পরে আমাদের নাকি পুরসভা থেকে ঘর দেওয়া হবে।’’ কিন্তু সেই টাকা কবে দেওয়া হবে এবং তত দিন তাঁরা কোথায় দোকান ও বাড়ি করে থাকবেন সেই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাউকেই উচ্ছেদ করেন না। তাঁদের যাতে বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখব।’’

তবে এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর জন্য হেলিপ্যাড তৈরি করতে রাতের অন্ধকারে গাছ কাটা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল পুরসভা। শহরের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত এই গাছগুলি কাটতেই বাসিন্দা থেকে পরিবেশকর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন। তার রেশ কাটতে না কাটতেই উচ্ছেদ নোটিসে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন