মাস খানেক ধরে লাগাতার কুপ্রস্তাব দেওয়া হচ্ছিল স্কুল ছাত্রীকে। প্রতিবাদ করায় অভিযুক্ত যুবকের হাতে আক্রান্ত হয় নির্যাতিতা ছাত্রী। তার মাকেও মারধর করা হয়। তাঁদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে আক্রান্ত হন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাও। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে মালদহের মানিকচক থানার নূরপুরের ফকিরটোলা গ্রামে।
আক্রান্তদের উদ্ধার করে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। আঘাত গুরুতর হওয়ায় ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।। নির্যাতিতা ছাত্রী এবং তৃণমূল নেতাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মানিকচক থানায় নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবারের লোকেরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত যুবক ও তার পরিবারের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম নূর আলি সাই। সে পেশায় দিনমজুর। তার বাবা হুমায়ূন সাই সহ পরিবারের মোট চারজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচক থানার নূরপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ফকিরটোলা গ্রামে বসবাস করে ওই নির্যাতিতা ছাত্রী। সে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তার বাবা এবং দুই দাদা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে মা এবং মেয়ে থাকত। অভিযোগ, গত দু’ মাস ধরে ছাত্রীটিকে উত্যক্ত করত প্রতিবেশি যুবক নূর আলি সাই। এমনকী তাকে কুপ্রস্তাবও দিত । ওইদিন সন্ধেবেলা টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরছিল ছাত্রীটি। সেই সময় তার পথ আটকে ফের কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়। বাড়ি গিয়ে মেয়েটি তার মাকে সমস্ত ঘটনাটি জানায়। তারপরেই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ওই মহিলা অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে যায়। সেই সময় ওই নির্যাতিতা ছাত্রী এবং তার মাকে গালিগালাজ দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
বাঁশ দিয়ে ওই মহিলার মাথায় আঘাত করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ আয়েশ করণী। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গেলে অভিযুক্ত নূর আলি সাই ও তার পরিবারের লোকেরা পালিয়ে যায়। নির্যাতিতা ছাত্রী বলে, ‘‘স্কুল কিংবা টিউশনে পড়তে যাওয়ার সময় আমাকে লাগাতার কুপ্রস্তাব দিত নূর আলি। থানাতে অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।’’ নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করলে আমার মেয়ের বাড়ির বাইরে যাওয়াই দায় হয়ে উঠবে।’’ অভিযুক্ত যুবক ও তার পরিবারের লোকেরা ফেরার।