১) ফাগু ওরাওঁ ২) সোমারি ওরাওঁ
ডাইন অপবাদে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে প্রথমে মারধর, এরপর বস্তায় ভরে পুকুরে জলে ফেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। কুসংস্কারের বশে মধ্যযুগীয় এই বর্বরতার সাক্ষী থাকল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের ভাড়িলা শ্রীবই এলাকা। গত রবিবারের ঘটনা। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
ফাগু ওরাওঁ নামে বছর পঁয়ষট্টির ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন পরিবারের অন্য সদস্যেরাও। ওই বৃদ্ধ ও তাঁর মেয়ে সোমারি বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযোগ, মারধরের পর প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে ওই পরিবারটিকে। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে গোটা পরিবার। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভাড়িলা শ্রীবই এলাকারই বাসিন্দা চম্পা ওঁরাওয়ের স্ত্রী গত ১৯ ডিসেম্বর বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অভিযোগ, এই মৃত্যুর জন্য ফাগু ওরাওঁকে দায়ী করা হয়। ফাগুকে ডাইন অপবাদ দিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় এলাকার বাসিন্দা পুনা ওঁরাও, গণেশ ওঁরাও, জিতেন ওঁরাও-সহ মোট আটজন। রাতে ফাগুকে বাড়ি থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে অভিযুক্তেরা। লাঠিসোটা দিয়ে মারধরের পর তারা ফাগুকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ফাগুর মেয়ে সোমারি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছেলে সুনীল-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা এসে ফাগু এবং সোমারিকে উদ্ধার করে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করান। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে তপন থানায় আটজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। এদিকে ঘটনার জেরে রীতিমত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ফাগুর পরিবারের সদস্যেরা।
এ দিন ফাগুর ছেলে সুনীল বলেন, ‘‘তিনদিন বাবা হাসপাতালে ভর্তি ছিল। মঙ্গলবার ছুটি পেয়েছে। আমরা দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে তপন থানার পুলিশ।