Dengue

ডেঙ্গিতে মৃত মহিলা, আশঙ্কা রায়গঞ্জেও

শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও দু’টি নার্সিংহোমে তাঁর রক্তপরীক্ষায় এনএস-ওয়ান ও ম্যাক অ্যালাইজা পজিটিভ ধরা পড়েছে। মূলত, বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও নার্সিংহোম স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন নিয়ে ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষা করে। সেক্ষেত্রে, সেই সব রিপোর্ট স্বীকৃত বলে দার্জিলিং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি।

Advertisement

গৌর আচার্য

ভাটল (রায়গঞ্জ) শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

লক্ষ্মী অধিকারী। নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতার নাম লক্ষ্মী অধিকারী (৪১)। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বাড়ি রায়গঞ্জ থানার ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটোল হাট এলাকায়। তিনি স্বামী বাসুদেব ও একমাত্র মেয়ে বর্ণালির সঙ্গে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। বাসুদেবের শিলিগুড়ির সেবক রোড এলাকায় পানের দোকান রয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে লক্ষ্মীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ার কথা দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও দু’টি নার্সিংহোমে তাঁর রক্তপরীক্ষায় এনএস-ওয়ান ও ম্যাক অ্যালাইজা পজিটিভ ধরা পড়েছে। মূলত, বেসরকারি প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও নার্সিংহোম স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন নিয়ে ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষা করে। সেক্ষেত্রে, সেই সব রিপোর্ট স্বীকৃত বলে দার্জিলিং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি নার্সিংহোম থেকে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকেরা।

উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার বক্তব্য, ‘‘সরকারি হাসপাতাল কিংবা মেডিক্যাল কলেজে কোনও রোগীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা না হলে তিনি ঠিক কী কারণে মারা গিয়েছেন, তা স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হলে তাঁদের অবস্থার কিছুটা উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত শারীরিক পরীক্ষা সম্ভব হয় না। পরে রোগীদের অঙ্গ অকেজো হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতেই পারে।’’

Advertisement

লক্ষ্মীর স্বামী বাসুদেবের দাবি, তাঁর স্ত্রী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েই মারা গিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা ওই বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও দু’টি নার্সিংহোমের দেওয়া লক্ষ্মীর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তাঁদের সে কথাই জানিয়েছেন। কিন্তু ভর্তি করানোর পর থেকেই লক্ষ্মীর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর শারীরিক পরীক্ষার সুযোগ পাননি। সেই কারণেই, লক্ষ্মীর ডেথ সার্টিফিকেটে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি উল্লেখ করা হয়নি বলে তাঁর দাবি।

দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, লক্ষ্মীর ডেঙ্গির উপসর্গের পাশাপাশি কিডনির সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগের লক্ষণ ছিল। চিকিৎসকদের একাংশের অবশ্য মত, কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে তাঁর রক্তের প্লেটলেট দ্রুত কমতে শুরু করে। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।

লক্ষ্মীর দেওর পেশায় শিক্ষক সুব্রতের দাবি, ‘‘গত ২৪ সেপ্টেম্বর জ্বর হয় তাঁর। ২৮ সেপ্টেম্বর বিধান রোড এলাকার একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে তাঁর রক্ত ও ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্টে এনএস-ওয়ান পজিটিভ ধরা পড়ে। পর দিন লক্ষ্মীকে শিলিগুড়ি শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সেখানেও তাঁর এনএসওয়ান ও ম্যাক অ্যালাইজা পজিটিভ ধরা পড়ে। গত ৫ অক্টোবর লক্ষ্মীকে সেবক রোডের ওই নার্সিংহোমে রেফার করা হয়। সেখানেও একই রিপোর্ট মেলে।’’ এর পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন