Disaster

ঝড়ে গেল ঘর, মৃত ১

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম ২৫ জন। পাঁচ শতাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০১:০৫
Share:

ছাদহীন-২: এমনই অবস্থা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

গোটা গ্রাম যেন ধ্বংসস্তূপ। রাস্তার দু’ধারে একের পর এক বাড়ি লুটিয়ে পড়েছে মাটিতে। পাশেই পড়ে রয়েছে গবাদি পশুর মৃতদেহ। এদিক ওদিক থেকে ভেসে আসছে কান্না। কারও স্বামী গাছের চাপায় মারা গিয়েছেন। কারও সন্তান জখম হয়েছে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতে পনেরো মিনিটের ঝড়ে এমনই অবস্থা কোচবিহারের মরিচবাড়ি-খোল্টা গ্রামের। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে লকনডাউন চলছে। এমনিতে গৃহবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন মানুষ। সেই ‘গৃহ’কে চোখের সামনে ধুলিসাৎ হতে দেখে দিশেহারা গোটা গ্রামের লোকজন। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, এখন ‘লকডাউন’ হবে কী করে? প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম ২৫ জন। পাঁচ শতাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার এই ঝড়ে কোচবিহারের অনেক জায়গাই লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের মরিচবাড়ি-খোল্টা গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, ঝড় ওঠার একটু আগে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন গ্রামের বাসিন্দা অখিল সূত্রধর (৫৫)। ঝড় ওঠায় তিনি একটি দোকানের ছাউনিতে আশ্রয় নেন। সেই সময়ে একটি বড় গাছ তাঁর মাথার উপরে ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। কিছুক্ষণ ধরে ওই গ্রামে ঝড়ের তাণ্ডব চলে। ঝড় থামলে দেখা যায়, গোটা গ্রাম কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অখিলের স্ত্রী স্বপ্না সূত্রধর কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “ঝড় থামার পরে দেখি সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা লুকিয়ে বেঁচেছি। আমার স্বামী বাঁচতে পারেননি।” ঝড়ের পরে আশপাশের গ্রাম থেকে অনেকে ছুটে আসেন। তাঁরাই একের পর এক লোককে হাসপাতালে নিয়ে যান। গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েক জন বলেন, “সব শেষ হয়ে গেল। গবাদিপশুও বাঁচাতে পারলাম না। এমনিতেই কাজ নেই। এখন খাব কী?”

শুক্রবার সকালে ওই গ্রামে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। পরে অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় সেখানে যান। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “প্রাথমিক ভাবে প্রত্যেকের খাবার এবং মাথা গোঁজার ব্যবস্থা তৈরিতে উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।” জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানান, গ্রামের ১৫০টি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ৪০০টি বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন