সুসজ্জিত: মালবাজারে পর্তুগালপ্রেমী রাজার দোকান। নিজস্ব চিত্র
‘ফোরসা পর্তুগাল! ভ্যামোস ক্রিশ্চিয়ানো!’ পর্তুগিজ ভাষায় এর অর্থ করলে দাঁড়ায়, ‘প্রবল শক্তিতে এগোও পর্তুগাল! সাবাশ ক্রিশ্চিয়ানো!’ বিশ্বকাপে রাশিয়ার কোনও স্টেডিয়ামে দর্শকদের মুখ থেকে নয়, এই উচ্ছ্বাসবাক্য বেরোল মালবাজারের মনিহারি দোকানের মালিক বছর আঠাশের যুবক রাজা রায় সাহার মুখ থেকে!
জপমন্ত্রের মতো বুধবার সারা দিন ধরে কাজের ফাঁকে ফাঁকে আউড়ে গেলেন রাজা। মালবাজার পুর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কলোনি ঢোকার মুখে এত দেশের ফ্লেক্স ও পতাকা ঝুলে রয়েছে যে ইতিমধ্যেই স্থানীয়রা এই রাস্তার নাম মজা করে রেখেছেন ‘বিশ্বকাপ সরণি!’ এই রাস্তার ভিতরেই রাজার দোকান। ফুটবলে পর্তুগাল আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তাঁর স্বপ্নের দেশ ও তারকা। স্পেনের খেলার দিন একটু নার্ভাস হয়ে পড়লেও সিআর-সেভেনের দাপটে শেষ পর্যন্ত টগবগে হয়ে ওঠেন তিনি। বুধবার সন্ধেয় প্রিয় নায়ককে গোল করতে দেখেও লাফিয়ে উঠেছেন তিনি। চেঁচিয়ে বলেছেন, ‘‘আমার প্রার্থনা ব্যর্থ হয়নি!’’
এই ক’দিনেই দোকানের সামনের ভোল পুরো বদলে ফেলেছেন তিনি। ভিতরে-বাইরে সর্বত্র পর্তুগালের পতাকা। নিজেও পর্তুগালের জার্সি পরে দোকানদারি করছেন। আর শো-কেস, আলমারি সবেতেই সাঁটানো রোনাল্ডোর ছবি। জিনিসপত্র বিক্রিতেও থাকছে চমক। রাজার ঘোষণা, পর্তুগাল যত এগোবে, দোকানের ক্রেতাদের খুশি করতে নানা উপহার আর ছাড়ও দেবেন তিনি। রাজা বলেন, “অন্য দলের ১১ জনের সমান হল রোনাল্ডো। এর আগে কোনও ফুটবলারকে এতটা চাপ নিয়ে সফল ভাবে উতরে দিতে দেখিনি বলেই আমি পর্তুগালের গর্বিত ভক্তের একজন।”
রাজার দাদা জিৎ পেশায় গৃহশিক্ষক। তিনি আবার ব্রাজিলের সমর্থক। ভাইয়ের আশা যাতে অপূর্ণ থাকে এখন এমনই চাইছেন তিনি। “ভাই পর্তুগাল নিয়ে যে ভাবে মাতামাতি করছে তা দেখতে ভাল লাগলেও আখেরে ও সফল হবে না”, হাসতে হাসতে এমনই জানালেন জিৎ। রাজার দোকানের নিয়মিত গ্রাহক মানিক সাহা, সুবীর বসুরা জানান, রাজার দোকানে গেলে একটা বিশ্বকাপের গন্ধ পাওয়া যায়। রাজা আর পাঁচটা দোকানির মত নন।