পুরাতন মালদহে বিরোধী জোটই চিন্তা তৃণমূলের

পুরাতন মালদহ পুরসভায় তৃণমূল বিরোধী বোর্ড গড়তে এখনও এককাট্টা বিরোধী জোটের সদস্যরা। পুরভোটের ফলাফল ঘোষণার ১০ দিন বাদেও তাই দুশ্চিন্তার ভাঁজ শাসক দলের কপালে। ওই পুরসভায় বিরোধী জোটের কাছে হেরেছেন তৃণমূলের বিদায়ী চেয়ারম্যান। বিজেপি ও সিপিএমের কাউন্সিলর ছাড়া ওই জোটে রয়েছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নির্দল হয়ে জেতা দুই কাউন্সিলরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০২:৫৯
Share:

পুরাতন মালদহ পুরসভায় তৃণমূল বিরোধী বোর্ড গড়তে এখনও এককাট্টা বিরোধী জোটের সদস্যরা। পুরভোটের ফলাফল ঘোষণার ১০ দিন বাদেও তাই দুশ্চিন্তার ভাঁজ শাসক দলের কপালে। ওই পুরসভায় বিরোধী জোটের কাছে হেরেছেন তৃণমূলের বিদায়ী চেয়ারম্যান। বিজেপি ও সিপিএমের কাউন্সিলর ছাড়া ওই জোটে রয়েছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নির্দল হয়ে জেতা দুই কাউন্সিলরও। তার পরেও ত্রিশঙ্কু ওই পুরসভায় বিরোধীদের ও তৃণমূলের প্রাপ্ত আসন সংখ্যা যথাক্রমে ১০। পরিস্থিতি না পাল্টালে টসেই ভাগ্য নির্ধারণ হওয়ার কথা পুরসভার।

Advertisement

কিন্তু টস নিয়ে চিন্তাভাবনা দূরে সরিয়ে আপাতত তৃণমূলের পাশাপাশি মরিয়া হয়ে বোর্ড গড়ার লড়াই চালাচ্ছে বিরোধী জোটও। সেক্ষেত্রে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত দুই নির্দল কাউন্সিলার যেমন তৃণমূলের টার্গেট তেমনি তৃণমূলের জয়ী কাউন্সিলারদের একাংশকে টার্গেট করে এগোচ্ছে বিরোধীরা। পুরভোটে জয়ী হলেও তৃণমূল কাউন্সিলারদের একাংশ বিদায়ী চেয়ারম্যানের বিরোধী বলেই পরিচিত। সেক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে তাদের দু একজনকে পাশে পেতে পারেন বলে আশা বিরোধীদের। যদিও সেই সম্ভাবনাকে অবান্তর বলে দাবি করেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে এখনও দোলাচলে থাকা পুরাতন মালদহ পুরসভা কার দখলে যাবে, কে-ই বা চেয়ারম্যান হবেন সেটাই এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুরাতন মালদহে ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১০টি, বিজেপি ৫টি, সিপিএম ২টি ও নির্দল ৩টি আসন পেয়েছে। পুরভোটের আগেই প্রার্থীপদ নিয়ে বিদায়ী চেয়ারম্যানের সঙ্গে তৃণমূলের একাংশের বিরোধ চরমে ওঠে। তার জেরে ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বশিষ্ঠ ত্রিবেদী ছাড়াও ছাত্র নেতা সফিকুল ইসলাম ওরফে নেপু সহ পাঁচজন নির্দল হয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। বশিষ্ঠবাবু ও সফিকুল জয়ী হয়েছেন। আর জোটের একমাত্র নির্দল প্রার্থী পরিতোষ ঘোষের কাছে হেরেছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান। বিদায়ী চেয়ারম্যান বিভূতি ঘোষ হেরে গেলেও জিতেছেন তার ভাইপো কার্তিক ঘোষ। তাঁকে চেয়ারম্যান করতে কাকা বিভূতিবাবু সচেষ্ট বলে বিরোধীদের পাশাপাশি খবর তৃণমূলের একাংশেরও। বিভূতিবাবুকে আটকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন দলে তাঁর বিরোধীরা।

Advertisement

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের কথায়, ওখানে নির্বাচনেও যে জোট হয়েছে তা অস্বীকার করতে পারি না। বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায়ও বলেন, ‘‘আমরা এখনও বিরোধী জোটে। কি হবে তা সময়ই বলবে।’’

কিন্তু সমসংখ্যক আসন নিয়ে কীভাবে তৃণমূলকে ঠেকাবে বিরোধীরা?

তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা তথা নির্দল কাউন্সিলর বশিষ্ট ত্রিবেদী বলেছেন, ‘‘বোর্ড গড়ার ক্ষেত্রেও বিরোধী জোট একজোট হয়েই রয়েছে। বিদায়ী চেয়ারম্যানের পরিবারতন্ত্র ভাঙতে ওদের একাধিক কাউন্সিলারদেরও সমর্থন বিরোধী জোট পাবে বলে আশা করছি।’’ তবে তারা কারা তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি তিনি।

যদিও পুরাতন মালদহ টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বিভূতি ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দল থেকে কাউকে ওরা পাবে সেটা অবান্তর। তবে আমাদের দিকে কেউ আসবে কি না তা বলতে পারব না। বোর্ড আমরাই গড়ব। জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী মালদহে এসে কে চেয়ারম্যান হবেন তা স্থির করবেন।’’

ত্রিশঙ্কু ওই পুরসভায় তৃণমূলই বোর্ড গঠন করবে বলে পুরসভার ফলাফলের পরেই জানিয়েছিলেন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘তাস খেলায় টেক্কাটা আস্তিনে গুটিয়ে রাখা হয়। সময় হলে আস্তিন থেকে টেক্কা দিয়ে বাজিমাত করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন