আসন সংরক্ষণ বন্ধ হওয়ায় জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসের দাঁড়ানো নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানুয়ারি মাসের শেষ দিন শিয়ালদহ থেকে এবং ফেব্রুয়ারি মাসের এক তারিখ জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে ট্রেনটিতে আসন সংরক্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসের স্টপেজের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সামিল হয়েছিল স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পদাতিক এক্সপ্রেস ট্রেনটি জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে দাঁড়ানো শুরু করে। গত মাসের ১০ তারিখ যে দিন প্রথম ট্রেনটি শিয়ালদহ থেকে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে এসে দাঁড়ায় সে দিন ট্রেনের চালক সমেত কর্মীদের মালা দিয়ে বরণ করা হয়। যাত্রীদের মিষ্টিমুখ করানো হয়। জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা ধরেই নিয়েছিলেন যে বরাবরের জন্য ট্রেনটি জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে দাঁড়াবে। রেলের জলপাইগুড়ি সংলগ্ন টিকিট বুকিং অফিস সুত্রে জানা গিয়েছে টিকিট বিক্রিও ক্রমশ বাড়ছিল।
এই অবস্থায় পদাতিক এক্সপ্রেসে আসন সংরক্ষণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে আসতে বাসিন্দাদের। জলপাইগুড়ির স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রকাশ তালুকদারকে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন কাজে কলকাতায় যেতে হয়। আগেভাগে আসন সংরক্ষণ করে রাখেন তিনি। ফেব্রুয়ারি মাসের পাঁচ তারিখের জন্য পদাতিক এক্সপ্রেসে আসন সংরক্ষণ করতে গেলে জলপাইগুড়ি স্টেশনের কাউন্টার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে পদাতিক এক্সপ্রেসে আসন সংরক্ষণ বন্ধ আছে। তিনি বলেন, “পদাতিক এক্সপ্রেসে যাতায়াত করলে সময় অনেকটা বাঁচে। কারণ জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে রাত আটটা পাঁচে ওঠা যেত আবার ফেরার সময় কলকাতা থেকে রাত এগারোটায় রওনা হওয়া যেত। পছন্দের ট্রেন ছিল পদাতিক।”
নর্থবেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসের স্টপেজ নিয়ে বহু আন্দোলন করা হয়। রেল মন্ত্রকে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। সংগঠনের সহ সভাপতি প্রদীপ দেব বলেন, “চালু করে ট্রেনটির দাঁড়ানো বন্ধ করে দেওয়া হলে তা খুব দু:খজনক ঘটনা হবে। আমরা আলিপুরদুয়ারের ডিআরএমের সঙ্গে অবিলম্বে দেখা করব এবং রেল মন্ত্রকে চিঠি দিয়ে ট্রেনটি চালু করার দাবি জানাবো।”
পিছিয়ে নেই রাজনৈতিক দলগুলিও। জলপাইগুড়ি জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি অম্লান মুন্সি বলেন, “জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস না দাঁড়ালে আমরা ওই স্টেশনে রেল অবরোধ করব।” তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যদি স্টপেজ তুলে নেওয়া হয় তাহলে জলপাইগুড়ির প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হবে। আমরা এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের ডাক দেব।”
রেল দফতর অবশ্য এ বিষয়ে নিশ্চুপ। আলিপুরদুয়ারের বিভাগীয় রেল আধিকারিককে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।