ধানে ক্ষতি উত্তর জুড়ে

পুজোর পরেই নবান্ন উৎসব। তবে শ্রাবণ-ভাদ্রের বন্যা পরিস্থিতির জেরে নবান্নতে গোলা ভরা ধান দেখা যাবে না বলে ধরেই নিয়েছে কৃষি দফতর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

বন্যার জল বইছে ধান গাছের ওপর দিয়ে। হাজার হাজার হেক্টর জমি জলের তলায়। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ জুড়েই এ বার আমন ধান উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর। এই ক্ষতি কী ভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে উদ্বেগে প্রশাসন। প্রয়োজনে আগামী রবি মরসুম এগিয়ে আনা যায় কি না তা নিয়েও আলোচনা চলছে। প্রাথমিক ভাবে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে জানা গিয়েছে, কয়েক লক্ষ হেক্টর জমির ধান জলে ডুবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। টাকার পরিমাণে ক্ষতির অঙ্ক অন্তত চারশো কোটি।

Advertisement

পুজোর পরেই নবান্ন উৎসব। তবে শ্রাবণ-ভাদ্রের বন্যা পরিস্থিতির জেরে নবান্নতে গোলা ভরা ধান দেখা যাবে না বলে ধরেই নিয়েছে কৃষি দফতর। উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি শুরু হয়েছিল কোচবিহার-জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার থেকে। তার কিছুদিন বাদেই দুই দিনাজপুর এবং মালদহে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার এবং ময়নাগুডি ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ সর্বাধিক বলে দাবি। জেলা কৃষি দফতরের দাবি অন্তত ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান বন্যার জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর মহকুমায় ফি বছর রেকর্ড পরিমাণে ধান চাষ হয়। এই মহকুমাতেই ১ লক্ষ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র ইসলামপুর মহকুমাতেই ক্ষতির পরিমাণ ২৫৯ কোটি টাকা বলে কৃষি দফতরের কর্তারা দাবি করেছেন (বুধবার এই সংস্করণে ইসলামপুর মহকুমায় চাষে ক্ষতি সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত খবরে ভুল শিরোনাম প্রকাশিত হয়েছে। এ জন্য আমরা দুঃখিত)। তুলনামূলক কম ক্ষতি হয়েছে কোচবিহারে। জেলায় ৬১ হাজার হেক্টর জমির ধান জলে পচে গিয়েছে।

Advertisement

কত ধান নষ্ট

জলপাইগুড়ি জেলা: ৭ হাজার ৩৮৫ মেট্রিক টন

ইসলামপুর মহকুমা: ৩ লক্ষ মেট্রিক টন

মালদহ: ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন

দক্ষিণ দিনাজপুর: ১০ লক্ষ মেট্রিক টন

মালদহে ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে প্রায় দেড়শো কোটি। জেলার ১৫টি ব্লকের মধ্যে ১২টি ব্লকেরই ধান গাছের খেত এখন জলের তলায়। মাস খানেক আগে ধান বোনা হয়েছিল জমিতে। গাছও বেড়েছিল তরতরিয়ে। কিন্তু টানা সাত দিনেরও বেশি সময় ধরে ধান গাছ জলের তলায় থাকায় সেগুলি সবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই এ বার খরিফ মরসুমে জেলার ধানের উৎপাদন একেবারেই মার খাবে বলে জানাচ্ছেন চাষিরাই। মার খাবে পুজোর চাষিদের পুজোর বাজারও।

দক্ষিণ দিনাজপুরে ৯৫ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি দফতর থেকে রাজ্যের কাছে পাঠানো প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমির আনাজ চাষের ক্ষতি হয়েছে। জেলা উপকৃষি আধিকর্তা জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘ধানের ক্ষতিপূরণে এখন জমিতে আর বিকল্প চাষের সম্ভাবনা নেই। রবি মরসুমে সর্ষে এবং ডালশস্য চাষের উপর নির্ভর করে চাষিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। তাতে উদ্যোগী হবে কৃষি দফতর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন