দলে টেনে, টসে জিতে বোর্ড গঠন

কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকারের অভিযোগ, ‘‘আমাদের জেতা গ্রাম পঞ্চায়েতকে দখল করতে নির্বাচিত দুই সদস্যকে অপহরণ করে নিজেদের দিকে টেনে গণতন্ত্রকে হত্যা করল তৃণমূল৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৯
Share:

পাহারা: মেন্দাবাড়িতে পুলিশের নিরাপত্তা বলয়। ছবি: নারায়ণ দে

কংগ্রেসের টিকিটে জেতা সদস্যকে প্রধান করে কংগ্রেসের দখলে থাকা আলিপুরদুয়ার জেলার একমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিল তৃণমূল কংগ্রেস৷
বৃহস্পতিবার এমন ঘটনাই ঘটল কালচিনির মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে৷ পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়৷ ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি সামাল দেয়৷
পঞ্চায়েত নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার জেলায় ৬৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র একটি করে গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস ও বামেরা৷ যদিও বোর্ড গঠনের আগেই দল ভাঙিয়ে বামেদের দখলে থাকা ওই একটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে নেয় তৃণমূল৷ কিন্তু নিজেদের জেতা একমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত মেন্দাবাড়িকে ধরে রাখতে মরিয়া ছিলেন কংগ্রেসের জেলা নেতারা৷ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১১টির মধ্যে ৭টি আসনে জিতেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীরা৷ বাকি ৪টি আসনে জয়ী হন তৃণমূলের প্রার্থীরা৷
২৭ অগস্ট মেন্দাবাড়িতে বোর্ড গঠনের দিন নির্দিষ্ট হলেও, আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় সে দিন তা স্থগিত করে দেয় প্রশাসন৷ তখনই কংগ্রেসের জেলা নেতারা অভিযোগ করেন, তাদের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের ভাঙাতে তৃণমূলকে সময় দিতেই প্রশাসন ওই দিন বোর্ড গঠন স্থগিত রেখেছিল৷
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সেখানে বোর্ড গঠনের দিন ঠিক হয়৷ বোর্ড গঠনের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা৷ একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়৷ কিন্তু আচমকাই দেখা যায় তৃণমূলের চার পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে একই গাড়িতে চেপে কংগ্রেসের জয়ী দুই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মনা রাভা ও শ্যামল রাভা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢুকছেন৷ স্বাভাবিকভাবেই সেই সময়ই সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ পুলিশের বাধা পেরিয়ে কংগ্রেস সমর্থকদের একাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ৷ পুলিশ তাড়া করে তাঁদের সরিয়ে দেয়৷
এ দিকে গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে ভিতরে ততক্ষণে বোর্ড গঠন করে ফেলে তৃণমূল৷ কংগ্রেস থেকে সদ্য দলে যোগ দেওয়া সদস্য মনা রাভাকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়৷ উপপ্রধান হন চন্দ্রা নার্জিনারী৷
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকারের অভিযোগ, ‘‘আমাদের জেতা গ্রাম পঞ্চায়েতকে দখল করতে নির্বাচিত দুই সদস্যকে অপহরণ করে নিজেদের দিকে টেনে গণতন্ত্রকে হত্যা করল তৃণমূল৷’’ যদিও সদ্য প্রধান হওয়া মনা রাভা বলেন, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থেই তারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘কংগ্রেসের দুই নির্বাচিত সদস্য নিজেদের ইচ্ছেয় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷’’
এ দিন টসের মাধ্যমে মাদারিহাটের শিশুঝুমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের দখলও নিয়েছে তৃণমূল৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ফল ত্রিশঙ্কু হয়৷ বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠনের সময় দেখা যায় তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের সমান সমান সদস্য রয়েছেন৷ এর পর টসের মাধ্যমে তৃণমূলের সদস্যরা সেখানে প্রধান ও উপ প্রধান নির্বাচিত হন৷ বোর্ড দখল হতেই শিশুঝুমরা এলাকায় বিজয় মিছিল বের করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন