Panchayat Election 2023

সিন্দুকে পড়ে বরাদ্দ টাকা, খরচ করতে পারছে না পঞ্চায়েত

জলপাইগুড়ি জেলায় ১৫তম অর্থ কমিশনের মোট বরাদ্দের ২৫ শতাংশ মাত্র খরচ হয়েছে। বহু গ্রাম পঞ্চায়েতে তিন, চার বা ছ’শতাংশ খরচ হয়েছে মাত্র।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৩ ০৭:৪৪
Share:

পড়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। প্রতীকী চিত্র।

পানীয় জলের ব্যবস্থা থেকে পরিকাঠামো তৈরির কোটি কোটি টাকা এসে পড়ে থাকলেও খরচ করতে পারছে না জেলার পঞ্চায়েতগুলি। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ১৫০ কোটিরও বেশি টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ, ৮০টি পঞ্চায়েত মিলিয়ে খরচ করেছে মোট বরাদ্দের সিকি ভাগ মাত্র। তার অর্থ এই নয় যে, গ্রামে কোনও কাজ বাকি নেই। বরং, বহু গ্রামেই রাস্তা ভাঙা, পানীয় জলের সরবরাহ নেই। বরাদ্দ না ফুরোলেও, ২০২২-২৩ আর্থিক বছর ফুরিয়েছে। কিছু দিন পরেই কেন্দ্র খরচেরহিসাব চাইবে। টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাই তড়িঘড়ি পঞ্চায়েতে ‘চাপ’ দিয়ে কাজ করাতে চাইছে জেলা প্রশাসন। তবে কাজ কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয়ে আধিকারিকদের একাংশ।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলায় ১৫তম অর্থ কমিশনের মোট বরাদ্দের ২৫ শতাংশ মাত্র খরচ হয়েছে। বহু গ্রাম পঞ্চায়েতে তিন, চার বা ছ’শতাংশ খরচ হয়েছে মাত্র। কয়েকটি পঞ্চায়েতে খরচ এক শতাংশেরও কম। প্রশাসন সূত্রের দাবি, যে পঞ্চায়েতগুলিতে রাজনৈতিক ‘অস্থিরতা’ রয়েছে, সেখানে খরচহয়েছে কম।

জলপাইগুড়ি জেলায় খারিজা বেরুবাড়ি-২ পঞ্চায়েতে খরচ হয়েছে সব চেয়ে কম। অর্থ কমিশনের ‘টায়েড গ্রান্ট’ তথা বেঁধে দেওয়া বরাদ্দের এক টাকাও খরচ করতে পারেনি এই গ্রাম পঞ্চায়েতটি। পঞ্চায়েত প্রধান সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অর্থ কমিশনের প্রকল্পের অনুমোদন দিতে বা খরচ শুরু করতে শুধু আধিকারিক স্তরে প্রক্রিয়া চালানো যায় না। পঞ্চায়েত প্রধান বা পঞ্চায়েত সদস্যদেরও অনুমোদন দরকার। সে কারণে বহু কাজ আটকে রয়েছেবলে দাবি।

Advertisement

জেলা প্রশাসন এত দিন কী করছিল, সে প্রশ্নও উঠেছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রথম বরাদ্দ এসেছে বহু দিন আগে। তখন সে বরাদ্দে কী-কী কাজ হয়েছে, কোন পঞ্চায়েতে কত কাজ হয়েছে, তার হিসাব প্রশাসন আদৌও নিয়েছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। জেলার এক তৃণমূল নেতারই প্রশ্ন, ‘‘যাঁদের নজরদারি করার কথা, তাঁদের ঘুম নিশ্চয় দেরিতে ভেঙেছে!’’

খাগরাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত কমিশনের মূল বরাদ্দের থেকে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি। কেন খরচ হয়নি? তৃণমূলের প্রধান বাবলু রায়ের বক্তব্য, ‘‘কিছু কাজ চলছে। কিছু কাজের জন্য জমি বা প্রয়োজনীয় সম্মতি পেতে দেরি হয়েছে। কোথাও ঠিকাদারি সংস্থা দেরি করেছে। তবে ২০ দিন পরে ছবিটা অনেকটাই বদলাবে।’’ কিন্তু আগে কাজ শুরু হয়নি কেন? প্রধান বলছেন, ‘‘নানা রকম সমস্যা থাকে। তবে এ বারহয়ে যাবে।’’

অন্য দিকে, তৃণমূলেরই দখলে থাকা ক্রান্তি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রায় ৬০ শতাংশ বরাদ্দ খরচ করতে পেরে জেলার মধ্যে শীর্ষে। এই পঞ্চায়েতের প্রধান বসুন্ধরা দাস বলেন, ‘‘যখনই টাকা পেয়েছি, টেন্ডার করেছি। কাজ হয়েছে, বিল দিয়ে দিয়েছি। কোনও সমস্যা হয়নি।’’

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে ধরে নজরদারি চলছে। তাড়াহুড়োয় যাতে কাজের মান খারাপ না হয়, তা নিশ্চিত করতেবলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন