Paresh Adhikary

Paresh Adhikary-Ankita Adhikary: বাড়ি থেকে স্কুল হাঁটাপথ, অঙ্কিতার চাকরির প্রথম দিনেও পাশে বাবা, চমকে যান শিক্ষকরা

ইন্দিরা গার্লস থেকে ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন অঙ্কিতা। উচ্চ মাধ্যমিকেও প্রথম বিভাগে পাশ করেন বলে স্কুল সূত্রের দাবি।

Advertisement

অনির্বাণ রায় , দেবজ্যোতি রায় লস্কর

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২২ ০৭:৫৪
Share:

মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গালর্স হাইস্কুল। যেখানে অঙ্কিতা অধিকারী পড়াতেন (বাঁ দিকে)। পরেশ অধিকারীর বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি থেকে স্কুল হাঁটাপথে। মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গালর্স হাইস্কুল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে সেই স্কুলে কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিন অঙ্কিতাকে সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা পরেশ অধিকারী। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে স্কুলে হাজির হতে দেখে শিক্ষিকা থেকে কর্মীদের একাংশ কিছুটা চমকেই উঠেছিলেন। মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পরেশ অধিকারী যে দিন স্কুলে গিয়েছিলেন, তখনও তিনি শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হননি। মাস তিনেক আগে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন মাত্র। তারও কয়েক মাস পরে তৃণমূল পরেশকে কোচবিহার লোকসভার আসনের টিকিট দেয়। লোকসভায় পরেশ জিততে পারেননি। গত বছর বিধানসভায় জিতে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হন। মন্ত্রী হওয়ার পরে অবশ্য মেয়ের স্কুলে পা রাখেননি পরেশে। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনায় পর্ষদের প্রতিনিধি হিসেবে মেখলিগঞ্জে দায়িত্বে ছিলেন অঙ্কিতা। মাধ্যমিক চলাকালীন বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

Advertisement

শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট এক নির্দেশে অঙ্কিতাকে স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়, ইন্দিরা গালর্স হাই স্কুলে যেতে পারবেন না অঙ্কিতা। সে খবরে আলোড়ন পড়ে যায় মেখলিগঞ্জে। স্কুলের শিক্ষিকা-কর্মীদের মধ্যে বার্তা চালাচালি শুরু হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া থাকেন জলপাইগুড়িতে। তাঁর স্বামী জলপাইগুড়ির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দিলীপ বর্মা। এ দিন প্রধান শিক্ষিকা বলেন, “কমিশনের নির্দেশে অঙ্কিতা অধিকারী আমাদের স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। হাই কোর্টের কোনও নির্দেশ আমরা এখনও পাইনি। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার থাকতে পারে না।” ইন্দিরা গার্লসেরই ছাত্রী ছিলেন অঙ্কিতা। রঞ্জনা তখনও প্রধান শিক্ষিকা। তিনি বলেন, “অঙ্কিতা ভাল ছাত্রী ছিল। বরাবরই কম কথা বলে। ও যে দিন কাজে যোগ দিতে আসে, সে দিন পরেশবাবুও সঙ্গে ছিলেন। তার পরে অবশ্য পরেশবাবু আর স্কুলে আসেননি।”

ইন্দিরা গার্লস থেকে ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করেন অঙ্কিতা। উচ্চ মাধ্যমিকেও প্রথম বিভাগে পাশ করেন বলে স্কুল সূত্রের দাবি। এর পর রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করেন। তার পরে বিএড ও এমএড পড়েছেন। মেখলিগঞ্জের স্কুলে শিক্ষিকা পদে যোগ দেওয়ার আগে বেশ কিছু দিন পড়িয়েছিলেন মেখলিগঞ্জের একটি বেসরকারি ডিএলএড-বিএড কলেজে। সেই কলেজের মালিকানার কিছু অংশ রয়েছে পরেশের হাতেই। বর্তমানে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন অঙ্কিতা। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্কিতা যে দিন গবেষণাপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন, সে দিন সর্বক্ষণ তাঁর সঙ্গী ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বাবা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement